অচল স্লুইস গেট, তলিয়ে যাচ্ছে আধাপাকা বোরো ধান

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাজুরা ও ভবনা’র খড়িবুনিয়ার স্লুইস গেট দুটির পাটা ভেঙে গেছে। এ কারণে পূর্ণিমার জোয়ারে লবণ পানি উঠে তিন উপজেলার আটটি বিলের আধাপাকা বোরো ধান তলিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক হাজার হেক্টর জমির আবাদ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় চাষিরা গেট দুটিতে পাট দেওয়ার দাবি জানালেও, কোনও উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় জোয়ারের লবণ পানি উঠে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তারা জানান, ভৈরব নদী ও খাজুরা খাল আটটি বিলের (মিনেদার, খড়িবুনিয়া, মাসকাটা, চাকুলী, শ্যামগঞ্জ, ঝিনাইখালী, কুমারখালী ও বিঘা বিল) মধ্য দিয়ে একদিকে শ্যামবাগাত হয়ে বাইনতলা গৌরম্বা এলাকায় গিয়ে মিশেছে। এসব বিলের ফসল রক্ষায় নদী-খালের প্রবেশ মুখে পানি উন্নয়ন বোর্ড বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ছয়টি স্থানে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করেন। এরপর গেট ও তার পাটাগুলো ভালো থাকলেও পানির প্রবল চাপে তা ভেঙে যায়। এরপর দুই-একবার পানি উন্নয়ন বোর্ড গেটের পাটগুলো মেরামত করলেও দীর্ঘ দিন ধরে আর সংস্কার করা হয়নি। এর ফলে এখন পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় জোয়ারের লবণ পানি উঠলে তা সরাসরি কৃষকের জমিতে পৌঁছে যাচ্ছে। 

কয়েক হাজার হেক্টর জমির আবাদ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা

লখপুর ইউনিয়নের জাড়িয়া মাইট কুমরা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, মুজাহিদ শেখ ও আব্দুর রশিদ জানান, খাজুরা ও ভবনার খড়িবুনিয়ার স্লুইস গেটে পাটা না থাকায় পূর্ণিমার গোনে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে আটটি বিলের কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধাপাকা ধান। ক্ষেতের চারপাশে বাঁধ দিয়ে কৃষকরা দিনে ও রাতে স্যালোমেশিন বসিয়ে সেচ দিয়ে পানি অন্যত্র ফেলে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। 

লখপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা অভিজিৎ গাউন জানান, আমরা বেশ কয়েকটি বিলে সরেজমিন তদন্ত করে দেখেছি। ধানের ক্ষেতে লবণ পানি উঠে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পানি ওঠা বন্ধ করতে না পারলে ধান তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হবে।

ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা কৃষ্ণা সরকার জানান, খাজুরা ও ভবনার খড়িবুনিয়ার স্লুইস গেট দুটিতে দ্রুত পাটা নির্মাণ করা সম্ভব না হলে, বাঁধ দিয়ে গেট বন্ধ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।