কলা চাষে ভাগ্য ফিরছে মোরেলগঞ্জের হাজারও কৃষকের

কলার চারা একবার রোপণ করে দুই বছরে ফলন পাওয়া যায় তিনবার। খরচ কম, লাভও বেশি। এ কারণে কলা চাষে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশা ইউনিয়নের কৃষকদের ভাগ্য ফিরেছে। 

মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযুক্ত। তাই দিন দিন মোরেলগঞ্জ উপজেলায় কলার আবাদ বাড়ছে। কলা চাষ, ব্যবসা ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ। দেশব্যাপী মোরেলগঞ্জে উৎপাদিত কলার চাহিদা থাকায়, আবাদ বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সড়ক পথে ট্রাকে কলা যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বনগ্রাম ইউনিয়নের চাষি আতাউর রহমান বলেন, ‘প্রথমদিকে এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলাম। ভালো লাভ হওয়ায় আবারও দুই বিঘা জমিতে চাষ শুরু করি। এরপর থেকে কলার আবাদ প্রতি বছরই বাড়াচ্ছি। কলা চাষ করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশার কয়েক হাজার মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে।’

মোরেলগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

ট্রাকে কলা নিতে আসা ঢাকা কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন জানান, মোরেলগঞ্জের কলা খেতে সুস্বাদু। তাই ঢাকার এর ব্যাপক চাহিদা। কারওয়ান বাজার মোকামে অনেক ফরিয়া এসে মোরেলগঞ্জের কলার খোঁজ করেন। প্রতি সপ্তাহে ৫-৬ ট্রাক কলা ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করেন। এভাবে অনেক  মোরেলগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা নিচ্ছেন।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সিফাত আল মারুফ জানান, লাভজনক হওয়ায় মোরেলগঞ্জের চাষিরা কলা চাষ করছেন। এখানে অনুপম, সাগর, সবরি, চিনিচাম্পা, উন্নত জাতের কাঁচকলা ও আনাজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কলা চাষ হচ্ছে। গত মৌসুমে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় কলা চাষ হয়েছিল এক হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে আরও ৭৫০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি একই জমিতে দুই অথবা তিন বছরের বেশি সময়ে কলার চাষ না করতে চাষিদের বলছে। এতে জমির উবরতা শক্তি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। দুই বছর কলার চাষ ও পরের বছরে আবার অন্য যেকোনও সবজি আবাদের পর কলা চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।