দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক, মাঠে পচছে তরমুজ

মাস খানেক আগেও তরমুজের দাম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ছিল তুঙ্গে। তবে এখন কৃষকরা হতাশ। পরিবহন সমস্যা ও দাম না পাওয়ায় খুলনার দাকোপে মাঠকে মাঠ তরমুজ নষ্ট হচ্ছে।

দাকোপের আনন্দনগর এলাকার কৃষক বাবুল শেখ বলেন, এক বিঘা জমিতে তরমুজ উৎপাদনে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৩৫ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখন তরমুজের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এক মাস আগেও তরমুজর দাম ছিল রমরমা। এখন দাম না পাওয়ায় তরমুজ মাঠেই ফেলে রাখতে হচ্ছে।

দাকোপ নিবাসী গোলাম মোস্তফা বলেন, মাঠে গাছ নেই। কিন্তু বড় বড় তরমুজ পড়ে আছে। আগে বিঘাপ্রতি লাখ টাকা লাভ হলেও এখন দামেই পাওয়া যাচ্ছে না। আনন্দনগর, ছোট চালনা, পানখলী, মৌখালী, তীলডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে তরমুজ নষ্ট হচ্ছে। ব্যাপারী না আসায় কৃষকরাই তরমুজ নিয়ে বাগুরা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকায় ছুটছেন। কিন্তু মোকামে দাম মিলছে না।

বানিশান্তার কৃষক উৎপল সানা বলেন, তরমুজ উৎপাদনে বিঘাপ্রতি ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে ব্যবসায়ীরা এখন ২০ হাজার টাকাও দাম বলেন না। খুলনা শহরে নিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না। মোকামেও প্রত্যাশিত দাম মিলছে না। 

কৃষক দেবাশীষ বাইন বলেন, গত বছর লাভ দেখে এ বছর ১১ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু এবার ৭ বিঘার তরমুজ বেচে খরচ ওঠেনি। আরও চার বিঘা জমির তরমুজ মাঠেই পড়ে আছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে এ জেলায় সাত হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়। লাভজনক হওয়ায় এ বছর ১৩ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে এর চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয় প্রায় সোয়া চার লাখ টন তরমুজ। দাকোপেই এ বছর সাত হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে অর্থকরী এ ফলের চাষ হয়। কিন্তু ভালো দাম না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত ৪৯ ভাগ জমির তরমুজ মাঠেই পড়ে আছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রমজানের শুরুতে তরমুজ লাভজনক ছিল। ঈদের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। তাই কৃষকরা হতাশ হয়েছেন।