শ্যামনগরে বাঁধ ভেঙে আরও ৫ গ্রাম প্লাবিত

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর তীরবর্তী বাঁধের ভাঙনের তৃতীয় দিনে উপজেলার আরও ৫টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার আরও অর্ধ্বশত মিষ্টি পানির পুকুরসহ নতুনভাবে প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমিসহ চিংড়িঘের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। কাঁচা-পাকা সড়ক ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি সম্পূর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় গোটা এলাকাজুড়ে খাবার পানির সংকট তৈরি হয়েছে।

এদিকে জোয়ার-ভাটার সঙ্গে সঙ্গে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ওঠানামা অব্যাহত থাকায় ভাঙনকবলিত অংশে গভীর খাদের সৃষ্টিসহ ভাঙনের বিস্তৃতি প্রায় সাড়ে পাঁচশ ফুটে পৌঁছেছে।

সরেজমিনে ভাঙনকবলিত অংশসহ প্লাবিত এলাকা পরির্দশনে দেখা যায়— পোড়াকাটলা, পশ্চিম এবং পূর্ব দুর্গাবাটি, ভামিয়া, দাতিনাখালী ও মাদিয়া এলাকার যাবতীয় চিংড়িঘের ও স্থানীয়দের বসতবাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে। শনিবার দুপুরের আগমুহূর্তে শুরু হওয়া জোয়ারের পানি প্রবল বেগে একই অংশ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশের পর বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের সামনের কেয়ারের রাস্তার অন্তত এক ফুট ওপর দিয়ে পাশের গ্রামগুলোতে প্রবেশ করছে। এ সময় আড়পাঙ্গাশিয়া ও পূর্ব দুর্গাবাটি সোনামুখী খাল দিয়ে জোয়ারের পানি কিছুটা মালঞ্চ নদীতে চলে গেলেও অতিরিক্ত পানির চাপে আড়পাঙ্গাশিয়া, মাদিয়ার অবশিষ্ট অংশসহ আরও তিনটি গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার পর্যন্ত ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় অন্তত ৫ হাজার ছোট বড় চিংড়িঘের ভেসে গেছে। এছাড়া দুই শতাধিক কাঁকড়ার ছোট বড় প্রজেক্ট পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার পাশাপাশি ২০-২২টি কাঁচা ঘর ধসে পড়েছে। এসব এলাকার শতাধিক কাঁচা- পাকা সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্তত ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানান বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

টুঙ্গিপাড়া গ্রামের প্রভাষক পরীক্ষিত মণ্ডল ও দুর্গাবাটির নীলকান্ত রপ্তান জানান, শুক্রবার তাদের চিংড়িঘের ডুবে যাওয়ার পর মনিবারের জোয়ারে বসতঘরে পানি ঢুকেছে। পরিবারের শিশু ও নারী সদস্যদের অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে পুরুষ সদস্যরা বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। পুরো এলাকা ডুবে যাওয়ায় তারা খাদ্য ও খাবার পানির সংকটে পড়েছেন।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর পওর (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিভাগের সেকশন অফিসার মাসুদ রানা জানান, নদীতে জোয়ারের চাপ বেশি বিধায় প্রস্তুতি থাকা পরও রিংবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। নদীতে পানির চাপ কমলে ভাঙনকবলিত অংশে রিংবাঁধ নির্মাণের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।