ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বাগেরহাটে প্রস্তুত ৩৪৪ আশ্রয়কেন্দ্র

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও এগিয়ে এসেছে। এর প্রভাবে রবিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করেছে। রাতভর হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সঙ্গে দমকা হাওয়া বইছে। এতে উপকূলীয় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ কর‌ছে। সিত্রাং মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিত্রাং উত্তর দিকে আরও এগিয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে এর অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, যা সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছিল ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। মধ্যরাতে সিত্রাং ছিল কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, যে দূরত্ব সন্ধ্যায় ছিল ৭১০ কিলোমিটার।

সিত্রাং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ছিল মধ্যরাতে, এই দূরত্ব সন্ধ্যায় ছিল ৭০০ কিলোমিটার। পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকেও দূরত্ব কমেছে, সন্ধ্যায় ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে থাকলেও মধ্যরাতে এর অবস্থান ছিল ৬০০ কিলোমিটার দূরে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার, যা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। সাগর আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ভারী অথবা অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, জেলার ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রন্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ আট হাজার ৪৩০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন। চার লাখ ৮০ হাজার নগদ টাকা ও প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল মজুত রয়েছে। এছাড়া উপকূল অঞ্চলের উপজেলাগুলোতে প্রস্তুতি সভা করা এবং জনগণকে সচেতন করতে মাইকিং করতে বলা হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব মোকাবিলায় সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রের থাকা মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।