মেহেরপুরে হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ড

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকের আয়া নার্গিস খাতুনকে হত্যায় দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার (১৩ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।

নিহত নার্গিস খাতুন উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের স্ত্রী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে মো. বাশারুল ইসলাম (৫২) ও একই গ্রামের জামিল হোসেনের ছেলে ফরজ আলী (৫১)। আসামিরা পলাতক রয়েছেন। এ মামলার প্রধান আসামি নার্গিসের সৎছেলে ইয়াকুব আলী মারা যাওয়ার তাকে এজাহার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মামলার নথির বরাত দিয়ে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী শহিদুল হক বলেন, উপজেলার বামুন্দী বাজারের মাহি ক্লিনিকে আয়া হিসেবে চাকরি করতেন নার্গিস। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিন মেয়েকে নিয়ে সাহেবনগরে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন। স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে তার সৎছেলের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে ক্লিনিকের উদ্দেশে বের হন নার্গিস। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। মায়ের সন্ধান না পেয়ে গাংনী থানায় জিডি করেন মেয়ে তসলিমা খাতুন। ১৮ নভেম্বর জিডিটি অপহরণ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। এই মামলায় তসলিমার সৎভাই ইয়াকুব আলী, ইউছুপ আলী ও ভগ্নিপতি ইসমাইল হোসেনকে আসামি করা হয়।

নিখোঁজের সাড়ে পাঁচ পর ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রতিবেশী বাশারুলের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে নার্গিসের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ইয়াকুব, বাশারুল ও জামিলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাংনী থানার তৎকালীন এসআই বিশ্বজিৎ কুমার। সেইসঙ্গে মামলা থেকে ইউছুপ ও ইসমাইলের নাম বাদ দেওয়া হয়। পরে ওই দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। স্বীকারোক্তিতে তারা জানান পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে ইয়াকুবের নির্দেশে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এর মধ্যে ইয়াকুব মারা যান। পরে তাকে মামলার এজাহার থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী শহিদুল হক বলেন, ‘আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।’