‘একদিনে ১০০ সড়ক-সেতু উদ্বোধন চাই নাকি ৫০০ বোমা চাই, সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‌‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তবে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ অনেক কিছুরই ভিত্তি রচনা করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন হওয়ার পর তিন বছর সাত মাস সময়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি করে দেন বঙ্গবন্ধু।’

শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প এবং খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

কর্মসূচির শুরুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে জাতির পিতার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী। পরে শেখ রাসেল জিমনেসিয়ামে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প এবং খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি।

স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি করে দেন বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানের চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র; এর কোনোটি বিদেশ থেকে ধার করা নীতি ছিল না। সবই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, এই মাটি ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা। বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে যে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, তা যদি আজ বাস্তবায়ন হতো, তাহলে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের চেহারা বদলে যেতো। কিন্তু পাকিস্তানি ও তাদের দোসররা তা মেনে নিতে পারেনি। যার কারণে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও দেশের মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য যারা কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে, মানবাধিকারের কথা বলছে, গণতন্ত্রের কথা বলছে। তারাই গণতন্ত্রের হত্যাকারী ও মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘনকারী। আমরা কি তাদের মায়া কান্নায় আগের ইতিহাস ভুলে যাবো, নাকি দেশ যে এগিয়ে চলছে, তা অব্যাহত রাখবো? আমরা কি একদিনে ১০০ সড়ক ও সেতু উদ্বোধন করতে চাই? নাকি ৫০০ বোমা চাই? সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে। আশা করি, আমরা এসব ভাববো, চিন্তা করবো এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবো। নিশ্চয় উন্নয়নের পথে হাঁটবো, মানবাধিকারের পথে হাঁটবো, স্বাধীনতার পক্ষে হাঁটবো এবং নৌকার পক্ষে রায় দেবো। যে নৌকা আমাদের ভাষার অধিকার দিয়েছে, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন দিয়েছে, আমরা তাকে নিয়েই সামনে এগিয়ে যাবো। আসুন একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. এম আর খান মেডিক্যাল সেন্টারে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দেন শিক্ষামন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যশোর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এইচ এম আহসান হাবীব, যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় একটি শিশুর আঁকা ছবি শিক্ষামন্ত্রীকে তুলে দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব।