সুন্দরবনে আবারও বাঘ দেখলেন বনকর্মীরা

সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ফের বাঘ দেখলেন বনকর্মীরা। তবে এবার রাতের আঁধারে টর্চ লাইটের আলোয় বাঘটির দেখা মিলছে। সু্ন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস চত্বরে বাঘটি দেখা গেছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাঘটি দেখা যায়। 

অন্ধকারের মধ্যে টর্চ লাইট মেরে বাঘটি দেখেন ও ভিডিও করেন তারা। এরপর বনরক্ষীরা কৌশলে বাঘটি তাড়িয়ে দেন। পরে ওই রাত ১২টার দিকে আবারও বাঘটির উপস্থিতি টের পান তারা।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, সন্ধ্যার দিকে অফিস চত্বরে কয়েকটি হরিণ ঘাস খাচ্ছিল। এমন সময় বনের ভেতর থেকে একটি বাঘ এসে হরিণের পালে আক্রমণ করে। বনকর্মীরা বিষয়টি দেখতে পান এবং ভিডিও করেন। একইসঙ্গে নানা শব্দ করে বাঘটিকে তাড়িয়ে দেন। পরে রাত ১২টার দিকে হরিণের অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুনতে পান তারা। এতে ধারণা করা হয়, বাঘটি গভীর রাতে আবারও ওই এলাকায় এসেছিল।

তিনি বলেন, এর আগেও অফিসের চারপাশে বিভিন্ন স্থানে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ দেখা গেছে। বাঘের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার কারণে বনকর্মীদের সন্ধ্যার পর একা বের হতে নিষেধ করেছি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন অফিসে ছয়টি বাঘের দেখা মিলেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুর পাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। প্রায় ২২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়। গত ৮ আগস্ট সকালে কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এ সময় মোবাইলে বাঘটির ভিডিও ধারণ করেন বনরক্ষীরা। গত ৭ অক্টোবর রাতে ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশন অফিসের বনরক্ষীদের ব্যারাকের সামনে দুটি বাঘ দেখা যায়।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম বলেন, শরণখোলা রেঞ্জ অফিসটির পূর্ব পাশ থেকেই গহীন বন এবং পশ্চিম পাশে ভোলা নদী। তাই পূর্ব পাশ থেকেই বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন পন্যপ্রাণী অফিস চত্বরে সহজেই প্রবেশ করে। পূর্ব পাশের পৌনে এক কিলোমিটার এলাকা যদি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আটকানো যায় তাহলে আর কোনও বাঘ ঢুকতে পারবে না, নিরাপদ থাকবে কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীরা। শিগগিরই সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। মনে হচ্ছে, সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে।