কুষ্টিয়ায় পানের বরজে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে গেছে ১ হাজার একর

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় পানের বরজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১০ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ও মোকারিমপুর ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠের পানের বরজে এ ঘটনা ঘটে। চার ঘণ্টার চেষ্টায় বিকাল ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহাদুরপুর ও মোকারিমপুর ইউনিয়নের রায়টা, মাধবপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মাঠে দুপুর ১২টার দিকে আগুন লাগে। খবর পেয়ে প্রথমে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট যায়। আগুন দ্রুত এক জমি থেকে আরেক জমির পাটকাঠির পানের বরজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে কুষ্টিয়ার দুটি, কুমারখালীর একটি, মিরপুরের দুটি, ঈশ্বরদীর দুটি ও চুয়াডাঙ্গার দুটিসহ মোট ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। বেশি রোদ ও হালকা বাতাস হওয়ায় আগুন দ্রুত মাঠের পর মাঠ ছড়িয়ে যায়। এছাড়া মাঠে পানির উৎস কম থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় সার্ভিসের কর্মীদের।

আড়কান্দি গ্রামের বাসিন্দা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘আগুনে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা পানের বরজ, ফসলি জমি, বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এলাকার মানুষের হৃদয়বিদারক আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।’

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, ‘আগুনে পানের বরজ পুড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রায়টা থেকে বাহাদুরপুর পর্যন্ত কয়েক বিঘা পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

পুড়ে গেছে ১ হাজার একর পানের বরজ

ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে পানের বরজে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। আগুন নেভাতে কুষ্টিয়া, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করেছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রায় এক হাজার একর বরজ পুড়ে গেছে। তবে কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্তের পর জানা যাবে।’

বাতাস থাকায় এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায় উল্লেখ করে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠের আশপাশে পানির উৎস ছিল না। এক কিলোমিটার দূরে নদী থেকে পানি আনতে হয়েছে। পানির ব্যবস্থা থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হতো।’

দুপুরে মোকারিমপুর ইউনিয়নের রায়টা এলাকার একটি পানের বরজে আগুন লাগে, পরে পাশের বরজে ছড়িয়ে পড়ে উল্লেখ করে কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, ‘এভাবে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে ছড়িয়ে পড়েছিল। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি আমরা। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে অনেক পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কীভাবে পানের বরজে আগুন লাগলো, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’