ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতাসহ গ্রেফতার ৮

খুলনায় ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাসহ নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতাসহ আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে সকালে এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাপ্পী সরকার। বুধবার রাতে খুলনা মহানগরের খালিশপুর থানার বাপ্পি সরকারের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক রায়হান (২৫), মহানগরের সহকারী মুখপাত্র এসএম শামাউন ইশমাম (২২), তাদের সহযোগী সোহেল শেখ (২৩), শেখ সাজ্জাদ (২০), নাঈমুর রহমান (২১), শেখ রাকিবুল ইসলাম (২৩), মোহিদুল ইসলাম রাজন (২৩) ও তৌহিদুল ইসলাম শাওন (২২)। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের নির্বাহী সদস্য মনিরুজ্জামান টিপু পলাতক।

খালিশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোবহান বলেন, ‘রাতে মহানগরের বাস্তহারা কলোনির বাসিন্দা বাপ্পি সরকারের বাসায় গণ্ডগোল চলছে জানতে পেরে সেখানে যায় পুলিশ। সেখান থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগে আট জনকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে মামলা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

ব্যবসায়ী বাপ্পী সরকারের স্ত্রী শাহানাজ বেগম বলেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আট-নয় জন যুবক আমাদের বাসায় উপস্থিত হন। এ সময় তারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ঘরে ঢোকেন। এরপর বাপ্পি সরকারকে বলে আপনি আওয়ামী লীগকে টাকা দেন এবং আপনার কাছে অস্ত্র আছে। তারা বলে আমাদের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ অবগত আছে। বাঁচতে হলে তাদের পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। আমার স্বামী টাকা দিতে অস্বীকার করলে মারধর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। পরে আমার ও সন্তানদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে ওই আট জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।’

খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‌‌‘ঘটনাস্থল থেকে আট জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরের সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘আমরা কোনও ধরনের অপরাধকে সমর্থন করি না। চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেফতার রায়হান মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাই বলে আমরা তার পক্ষে নই। প্রশাসন তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার করবে। আমরা কোনও ধরনের চাঁদা দাবিতে জড়িতদের প্রশ্রয় দেবো না। যারাই সংগঠনের পরিচয়ে অপরাধ করবে তাদের পুলিশের হাতে তুলে নেওয়ার জন্য স্থানীয় লোকজনকে বারবার বলে আসছি আমরা।’