কনস্টেবল হালিমাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা: মামলা করায় পরিবারকে হুমকির অভিযোগ

কনস্টেবল হালিমাকনস্টেবল হালিমার আত্মহত্যার ঘটনায় ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে মামলার আসামি করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করায় তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বাবা।
নিহতের বাবা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশে চাকরি করতে গিয়ে ইজ্জত নষ্ট হওয়ায় মেয়ে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে জীবন দিলো। মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাইতে গিয়ে আমার পরিবারও এখন হুমকির মুখে।
নিহত কনস্টেবল হালিমার খাতুনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওসিসহ মিজানুলের সহযোগী এসআই রিপন সরকার, এসআই খালেকুজ্জামান, এসআই হাসান ও কয়েক জন কনস্টেবলকে মামলার আসামি করার দাবি জানানোর পর থেকে আমার পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়া জন্য মেরে ফেলাসহ নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে হালিমাই অবিবাহিত এবং সবার ছোট ছিল। ধর্ষণের শিকার হয়ে সে (হালিমা) ওসি দেলোয়ার আহাম্মদের কাছে এসআই মিজানুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমার মেয়ে অপমানে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনা জানার পর মিজানুলসহ এসআই রিপন সরকার, এসআই খালেকুজ্জামান,এসআই হাসান ও কনস্টেবলরা আমার মেয়েকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতো। এটা আমার মেয়ে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে।

সংবাদ সম্মেলন করছেন হালিমার মামা, পাশে বাবাহালিমার পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে গৌরীপুর থানার ওসি দেলাওয়ার আহম্মেদ জানান, হালিমার পরিবার তাদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানায়নি। এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য,গত ২ এপ্রিল বিকেল ৩ টার দিকে গৌরীপুর থানা ব্যারাকের নিজ কক্ষের দরজা বন্ধ করে গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় কনস্টেবল (নম্বর : ১০৪৭) হালিমা খাতুন (২৫)। খবর পেয়ে সহকর্মীরা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাঠায়। সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে হালিমার মৃত্যু হয়। পরদিন রাতে আত্মহত্যার ঘটনায় সহকর্মী উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন হালিমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন। এরপরই এসআই মিজানুলকে গ্রেফতার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ৪ এপ্রিল এসআই মিজানুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছেন।
/জেবি/টিএন/আপ-এমও/