নেত্রকোনার হাওরে বাড়ছে হা-হা-কার

নেত্রকোনা

পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টির কারণে নেত্রকোনার ১৩৪টি হাওরের বোরো ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এ জেলার কয়েক লাখ মানুষ এখন অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছে। এরমধ্যে বারহাট্টা, আটপাড়া, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা, মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর অন্যতম। হাওরের হাজার হাজার পরিবারের মধ্যে দেখা দিয়েছে হা-হা-কার। অনেকে ঋণের বোঝা সইতে না পেরে ঘর-বাড়ি ছেড়ে শহরের চলে যাচ্ছেন।

খালিয়াজুরী উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রত ২৫ হাজার পরিবারের বেশিরই ভাগের ঘরে খাবার নেই। সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোতে বিনামূল্যে চাল ও নগদ অর্থ বিতরণ করেছে। এছাড়া ওএমএস, ভিজিডি, ভিজিএফ মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু সরকারের দেওয়া সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।

‘খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নের দিয়ারাকান্দা গ্রামের সমশের আলীর ছেলে আকির হোসেন আক্ষেপ করে জানান, ‘২২ হাজার টাকা ঋণ করে দুই একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু বানের পানিতে সব তলিয়ে যাওয়ায় এখন ঠিক মত খেতেও পারেন না। সরকারেরও কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। কাজ না থাকায় ১৫ টাকা  কেজির চালও কিনতে পারছেন না। এখন কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন আর কিভাবে খাবেন বুঝতে পারছেন না।’

আকির হোসেনের মতো একই কথা ওই গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে মস্তু মিয়া, মিরাশ আলী, চন্দ্রবানু, হাসিম মিয়ার ছেলে হযরত আলী ও আব্দুল মজিদের স্ত্রী রহিমা খাতুনসহ অনেকের।

স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য গোলাম আবু ইছহাক জানান, এলাকার মানুষ খুব সমস্যায় আছে। তাদের হাতে কোনও কাজ নেই, ঘরে খাবার সঙ্কট। তাই অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে শহড়ে চলে যাচ্ছে। মানুষ শহরমূখি হওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ জানান, এলাকার সমস্ত বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা সব দেখে শুনে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

চলতি বছরের ১৮ই মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালিয়াজুরীর মানুষের দুর্ভোগ পরিদর্শন করেছেন। পরে খালিয়াজুরী কলেজ মাঠে আয়োজিত সুধি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি হাওরের মানুষের সব সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের বিভিন্ন দফতরকে নির্দেশ দেন।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ