‘আশা ছিল আমার মৃত্যুর পর জানাজা পড়াবে’

আশুলিয়ায় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া রাশেদসহ ৪ জঙ্গি

ছেলের জঙ্গি হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না মোজাম্মেল হকের বাবা অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘আশা ছিল, আমি মারা গেলে আমার জানাজাটা পরাবে (পড়াবে ), দোয়া দরুদ করবে। আশা তো পূরণ হলো না।’

আশুলিয়ার নয়াপাড়ায় চৌড়াবাড়ি থেকে রবিবার (১৬ জুলাই) চার জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এদেরই একজন মোজাম্মেল। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালের সানকিভাঙ্গা গ্রামে।

মোজাম্মেল হকের মা শামসুন্নাহার  বলেন, ‘আগে জানলে মাদ্রাসায় পড়াবার দিতাম না। মোজাম্মেল আমার ছোট পুত আছিল। সবাই বললো তাই তারে আরবিতে দেই। আরবি পড়া বালা, এর লাগগেই তারে দিছিলাম। একদিন মরণ তো লাগবো। পুত মানুষ হয়ে দোয়া করবো।’

আব্দুল মান্নান ভালুকা জামতলী খাঘাটি ফাযিল মাদ্রাসার ইংরেজির সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। ৪ ছেলে ও ২ মেয়েকে স্কুলে পড়িয়েছেন। বংশে কেউ আলেম না থাকায় অনেক আশা করে ছোট ছেলে মোজাম্মেলকে হাফেজি পড়িয়ে কওমি মাদ্রাসায় খারেজি লাইনে ভর্তি করেন। সে আজ জঙ্গি হিসেবে গ্রেফতার হওয়ায় তিনি হতাশ।

মোজাম্মেলের মা-বাবা

শুধু বাবা-মা না,স্বজন ও প্রতিবেশিরাও মেনে নিতে পারছে না মোজাম্মেল জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার বিষয়টি। কয়েক বছর আগে সানকিভাঙ্গা বাজার জামে মসজিদে তারাবীর নামাজও পড়িয়েছিল সে।

মোজাম্মেলের বন্ধু আশরাফুল বলেন, ‘মোজাম্মেল লেখাপড়ার জন্য বেশির ভাগ সময় বাইরে কাটিয়েছে। সে ছোট থেকেই নামাজ রোজা করতো। দেখা হলে নামাজ পড়ার কথা বলতো। সে জঙ্গি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না।’

মোজাম্মেলের ভাবি জেসমিন আক্তার বলেন, ‘বাড়িতে আসলে কিংবা মোবাইল ফোনে কথা হলে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করতো নামাজ পড়েছি কিনা। সে সব সময় বলতো কাজ বাদ দিয়ে আগে নামাজটা পরে নিতে। ভাইদের মধ্যে মোজাম্মেল পরহেজগার ছিল। সে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে এটা আমরা কেন, কেউ মেনে নিতে পারছে না।’

 /এসটি/