বছরজুড়ে অযত্ন-অবহেলায় নেত্রকোনার শহীদ মিনার

বছর জুড়ে অযত্ন-অবহেলায় নেত্রকোনার শহীদ মিনার (২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তোলা ছবি)নেত্রকোনার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি সারা বছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে। শুধু বছরে একবার ২১ ফেব্রুয়ারি আগে আগে শুরু হয়ে যায় ধোয়া-মোছা আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। বছরের বাকি সময় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনকে দেখা যায় ঘর-গৃহস্থালির কাজ, কাপড় শুকানো, ময়লা-আবর্জনা ফেলা, এমনকি মূত্র ত্যাগের স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে।

নেত্রকোনা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে পেছনে রেখে সামনের খোলা জায়গায় সারা বছরই চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও স্কুল কলেজের নানা অনুষ্ঠান। চলে মধ্যরাত পর্যন্ত নাচ-গানসহ নানা আয়োজন। ১৯৫২ সালের ভাষা সংগ্রামী ও নেত্রকোনার প্রবীণ চিকিৎসক এম এ হামিদ খান বলেন, ‘জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সব শহীদ মিনারেই এমন অব্যবস্থাপনা দেখা যায়। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। এসব শহীদ মিনার শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি আসলে মুছে পরিষ্কার করলে হবে না। সারা বছরই পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য লোক নিয়োগ করতে হবে। সারা বছর এই শহীদ মিনারগুলো যেন আমাদের মাঝে সম্মানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।’ জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে  ভাষা সংগ্রামীদের নামসহ বোর্ড স্থাপনেরও দাবি জানান তিনি।

নেত্রকোনা সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার বলেন, ‘শহীদ মিনারকে রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু আমাদের শহীদ মিনারগুলো যেভাবে অযত্নে পড়ে থাকে তা অবশ্যই অপমানকর। সারা বছরই শহীদ মিনারের রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া প্রয়োজন, যাতে করে এর গুরুত্ব ২১ ফেব্রুয়ারির মতো সারা বছর মানুষ হৃদয়ে লালন করতে পারে।’

নেত্রকোনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, ‘শহীদ মিনার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রত্যোক নাগরিক ও  কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। শুধু ভাষার মাসেই নয়, শহীদ মিনার আমাদের ইতিহাস ও জাতিগত পরিচয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’