শিক্ষক হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন

নেত্রকোনানেত্রকোনার বারহাট্টায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হককে (৫৯) হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা সোমবার (২১ মে) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী আনোয়ার (৩০) বারহাট্টা উপজেলার আসমা ইউনিয়নের গাভারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গাভারকান্দা গ্রামের গোড়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক অবসরপ্রাপ্ত হয়ে হাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিকালে ৮ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রাইভেট পড়াতেন। এনিয়ে হাজীগঞ্জ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আইন উদ্দিনের সঙ্গে তার বিরোধ হয়। আইন উদ্দিন তাকে স্কুলে প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করে।
গত ২০০৮ সালের ১১ ডিসেম্বর দুপুরে মোজাম্মেল হক হাজীগঞ্জ বাজারে গেলে আইন উদ্দিন তাকে ডেকে তাদের দোকানে নিয়ে যায়। এসময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আইন উদ্দিনের লোকজন তার মাথায় আঘাত করলে তিনি আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নেত্রকোনা পরে ময়মনসিংহ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর ভোর ৬টার দিকে মারা যায় মোজাম্মেল হক।
পরে মোজাম্মেলের ছোট ভাই নুরুল ইসলাম আজাদ বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে ওই দিনই বারহাট্টা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে গত ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বিজ্ঞ বিচারক ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আসামি আনোয়ারের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণীত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণীত না হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি (চ. দা.) সাইফুল আলম প্রদীপ। আর আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জীবন কুমার সরকার।