ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতা হত্যা: ১৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

ময়মনসিংহময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ সদস্য সাজ্জাদ আলম ওরফে আজাদ শেখ হত্যার ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও মামলা নেয়নি পুলিশ। এতে পরিবার, স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান,নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি হুকুমদাতা হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তকে ১ নম্বর আসামিসহ আরও ২৫ জনকে আসামি করেছেন। এ বিষয়ে বাদীকে হুকুমদাতার মোবাইল নম্বর এবং কত তারিখ ও কখন হুকুম দেওয়া হয়েছে বিষয়টি অবহিত করার জন্য বললে তিনি জানাতে পারেননি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে মামলা এফআইয়ারভুক্ত হবে।

দিলরুবা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২ আগস্ট থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি। কিন্তু, পুলিশ এখনও মামলা হিসেবে নেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী আজাদ শেখ এক সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত’র গ্রুপেই ছিল। গত এক বছর ধরে ওই গ্রুপ ছেড়ে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও পৌরমেয়র ইকরামুল হক টিটুর গ্রুপে যোগ দেয়। এরপর থেকেই আকুয়া এলাকায় যুবলীগের মধ্যে দলীয় কোন্দল দেখা দেয় এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে শেখ ফরিদ গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দ্বন্দ্বের জেরে একাধিকবার তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। ৩১ জুলাই বিকালের দিকে আকুয়া এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন আমার স্বামীকে  কুপিয়ে জখম করে। পরে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর শান্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা শাওন হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে সোচ্চার আন্দোলন গড়ে তুলে মামলা নিতে বাধ্য করায় একটি মহল তাকে নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নেমেছে। মহলটি শেখ আজাদের পরিবারকে উসকে দিয়ে তাকে ফাঁসাতে চাইছে। আমিও শেখ আজাদ হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজাদ শেখ যুবলীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন।’ তার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড কেউ মেনে নিতে পারছেনা দাবি করে মেয়র আরও বলেন, ‘হত্যাকারীদের গ্রেফতারসহ দ্রুত বিচার দাবি করছি।’

উল্লেখ্য, যুবলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ৩১ জুলাই বিকালে প্রতিপক্ষের লোকজন যুবলীগ সদস্য সাজ্জাদ আলম ওরফে আজাদ শেখকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করার পর গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।