‘উনি তো বেড়াতে গিয়ে মারা গেলেন, কীভাবে মেয়েকে মানুষ করবো’

নিহতের স্বজনদের আহাজারি‘উনি তো বেড়াতে গিয়ে নৌকাডুবিতে মারা গেলেন। আগে তো মাদ্রাসার শিক্ষকতার টাকায় সংসার কোনও মতে চলেছে। এখন সংসার খরচ আসবে কোথথেকে। কীভাবে মানুষ করবো ৪ মাসের কোলের মেয়েকে...’ আহাজারি আর বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আজহারুল ইসলামের স্ত্রী মমেনা খাতুন।

বুধবার (৫ আগস্ট) নেত্রকোনার মদনে হাওরে ইঞ্জিন চালিত নৌকাডুবিতে ওই মাদ্রাসা শিক্ষক মারা গেছেন। নৌকাডুবিতে নিহত ১৮ জনের মধ্যে আজহারুল ইসলামের ভাতিজা জাহের হোসেন (২৫) ও আছেন।

মমেনা খাতুন বলেন, ‘একমাত্র মেয়েকে হাফেজা বানাতে চেয়েছিলেন। জমি-জিরাত তেমন একটা নেই। আমার স্বামীর মনের আশা কীভাবে পূরণ হবে এটা ভাবতে পারছি না।’

আজহারুল ইসলোমের বাবার আহাজারি

আজহারুল ইসলামের বৃদ্ধ বাবা বাছের উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার ছেলে মদনের তেলিখালি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতো। মাসে এক-দুইবার ছুটিতে বাড়িতে আসতো। ঈদের ছুটিতে এসে তার ভাতিজা জাহের ও এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষকসহ অন্যদের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল মদনে। পারিবারিক জমি খুব একটা নেই। ছেলের আয়েই তাদের সংসার চলতো। ছেলের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ও নাতির ভরণ পোষণ করা নিয়ে চিন্তিত তিনি।

স্থানীয় ফরহাদ হোসেন জানান, নৌকাডুবির ট্র্যাজেডি এলাকাবাসী মানতে পারছে না। বিশেষ করে আজহারুল ইসলামের মৃত্যুতে তার পরিবার খুব কষ্টের মধ্যে পড়ে যাবে।

mymensingh modon tragedy-2

সিরতা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মাহমুদুল আলম জানান, নৌকাডুবিতে ১৮ জনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে মদনের গোবিন্দশ্রী রাজালীকান্দা নামক স্থানে ইঞ্জিন চালিত নৌকাডুবিতে ময়মনসিংহ সদরের চরসিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া ও চরখরিচা গ্রামের ১৮ জন মারা যায়।