করোনায় থেমে নেই বিনার বিজ্ঞানীদের গবেষণা

করোনাকালেও থেমে নেই ময়মনসিংহস্থ বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বিনার বিজ্ঞানীদের গবেষণা কাজ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই তারা গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

করোনাকালীন লকডাউনে সবাই যখন ঘরের চার দেয়ালে বন্দি, সেই সময় বিনার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সিফ্ফাতে রাব্বানা খান স্বামী সন্তান ও সংসার সামলিয়ে গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঠে আর ল্যাবে তিনি খরা ও লবণ সহিষ্ণু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছেন। একদিনও থেমে থাকেনি তার গবেষণা কাজ।

গবেষণা করছেন বিনার বিজ্ঞানীরাড. সিফ্ফাতে রাব্বানা খান জানান, মাঠ আর ল্যাবে সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণা কাজ শেষে ঝুঁকি নিয়ে আবারও ফিরে যাচ্ছেন সংসারে। তিনি আরও জানান, দেশ ও জাতির কাছে দায়বদ্ধতা থেকে ঝুঁকি নিয়েই গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

শুধু ড. সিফ্ফাতে রাব্বানা খানই নন, বিনার সব বিজ্ঞানীই কৃষির উন্নয়নে গবেষণা কাজ অব্যাহত রেখেছেন। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিজ্ঞানী ড. শামসুন্নাহার বেগম জানান, আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কৃষকদের যাতে না খেয়ে থাকতে না হয় সে লক্ষ্যে আমরা করোনাকালেও গবেষণা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান, গবেষণা কাজ বন্ধ থাকলে দেশে খাদ্যের যোগান দেওয়া সম্ভব হবে না এবং খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। চলমান গবেষণা কাজ বন্ধ রাখার সুযোগ নেই।

বিনার গবেষণাগারবিনার উদ্যানতত্ত্ব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিনা হচ্ছে একটি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান। এখানে ফসলের অনেক টিস্যু কালচার ল্যাব আছে, যেখানে অনেক এক্সপেরিমেন্ট চলমান আছে। এই ল্যাব প্রতিদিন দেখাশোনা না করলে কিংবা কাজ না করলে হাজার হাজার টাকার  এক্সপেরিমেন্টের ক্ষতি হয়ে যাবে। এ কারণেই করোনাকালে ঝুঁকি নিয়েই বিজ্ঞানীদের ল্যাবে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। 

বিনার গবেষকরা এ পর্যন্ত ১৮টি ফসলের ১১২টি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন। এর মধ্যে ধানের ২৪টি জাত, গমের একটি, সরিষার ৩০টি, ডাল ও বাদামের ৩২টি, পাটের ২টি, সবজির ১৪টি, মরিচের ৫টি এবং লেবুর একটি জাত রয়েছে। তবে করোনাকালীন ধান, মশুর ডাল, সরিষাসহ ৫টি উন্নত জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন বিনার বিজ্ঞানীরা।

বিনার উদ্ভাবিত ধানকৃষির কাজ বন্ধ করা যাবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা মেনেই করোনার সময়ে বিজ্ঞানীরা একদিনের জন্যও গবেষণা কাজ বন্ধ রাখেনি দাবি করে বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, খাদ্য নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যেই তারা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।