ছেলের বিয়ের কাবিনের দিন বাবা-ছেলের দাফন

কনের পরিবারের সঙ্গে কথা ছিল রবিবার দুপুরে বিয়ের কাবিন হবে। কয়েক দিন পর অনুষ্ঠান করে বউকে ঘরে তুলবে। কিন্তু বউকে ঘরে তোলা হলো না। কাবিনের দিন সকালে মারা গেলেন ময়মনসিংহের ফুলপুরের সিঙ্গাপুর প্রবাসী জুলমত আলী (৩২)। এর আগে শনিবার রাতে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। মূলত বাবার শোকে ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।

রবিবার (২৩ জানুয়ারি) বাদ আসর জানাজা শেষে ফুলপুরের ভাইটকান্দি ইউনিয়নের মিসরিপাড়া মসজিদ সংলগ্ন গোরস্থানে বাবা-ছেলেকে দাফন করা হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১০ বছর সিঙ্গাপুরে প্রবাস জীবন কাটিয়ে বিয়ে করার আশায় ৫ জানুয়ারি বাড়িতে এসেছিলেন জুলমত আলী। বিয়ের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণালংকারসহ যাবতীয় জিনিসপত্র এনেছেন তিনি। দেশে আসার আগে বাবা আব্দুল জলিল শেরপুরের নকলা উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত করে রাখেন।

শনিবার মেয়ের বাড়িতে বাবা এবং ছেলে গিয়েছিলেন বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করার জন্য। সেখানে রবিবার দুপুরে কাবিনের সিদ্ধান্ত হয়। সেখান থেকে ফিরে শনিবার রাতে বাবার মৃত্যু হয়। শোক সইতে না পেরে ছেলেটি সকালে মারা যান।

জুলমত আলীর চাচাতো ভগ্নিপতি হামিদুল হক বলেন, স্বামী ও ছেলের মৃত্যু শোকে দিনা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। তাকে সামাল দেওয়া এখন দায়। জুলমতের বড় ভাই জহিরুল হক সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। শেরপুরের নকলা উপজেলার এক তরুণীর সঙ্গে আজ দুপুরে জুলমতের কাবিন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না। বিকালে পাশাপাশি কবরস্থানে বাবা-ছেলেকে দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভাইটকান্দি ইউনিয়নের গাইরা গ্রামের আব্দুল জলিল শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যালে আনার পর রাত দেড়টায় মারা যান। বাবার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলে জুলমত অজ্ঞান হয়ে পড়েন।  রাতেই চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যালে আনা হলে রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় তার।