যন্ত্রপাতিতে জমছে ধুলা, উদ্বোধনের ৮ বছরেও চালু হয়নি আইসিইউ 

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ২০১৫ সালে দুই শয্যাবিশিষ্ট ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) উদ্বোধন করা হয়। আট বছর পেরিয়ে গেলেও শুরু হয়নি এর কার্যক্রম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই আইসিইউটি চালু করা হয়নি। এতে নষ্ট হতে বসেছে আইসিইউর কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। তবে দক্ষ জনবলের অভাবে আইসিইউ চালু করতে পারেনি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয় সূত্র জানায়, মুমূর্ষু রোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০১৫ সালে আইসিইউটি উদ্বোধন করা হয়। সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম এর উদ্বোধন করেছিলেন। দুই শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউতে মুমূর্ষু রোগীদের রেখে চিকিৎসা দেওয়ার কথা। কিন্তু প্রশিক্ষিত জনবল ও পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এটি এখন পর্যন্ত চালু করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, আইসিইউর কার্যক্রম না থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের এ হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ ও ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানে রোগীকে নিতে স্বজনদের গুনতে হয় অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়াসহ থাকা-খাওয়ার বাড়তি খরচের বোঝা। অনেক সময় গুরুতর রোগীদের জেলার বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে অনেকের  মৃত্যু হয়।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আইসিইউ কক্ষের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। আইসিইউ কক্ষের ভেতরে যন্ত্রপাতি রাখা। তার উপর জমেছে ধুলাবালি। সাদা চাদরে মোড়ানো দুই পাশে চারটি বিছানা রয়েছে। এগুলোর উপরেও ধুলাবালি জমেছে।

জামালপুর পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলাল মিয়া জানান, হার্টের সমস্যাজনিত রোগী এ হাসপাতালে আনলেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় ময়মনসিংহ কিংবা ঢাকায়। আইসিইউ চালু না থাকায় ডাক্তাররা হার্টের রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারছে না। এ হাসপাতালে আইসিইউ চালু করাটা খুবই জরুরি।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘হাসপাতালটি জামালপুর জেলাসহ আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা। এ হাসপাতালে আট বছর আগে আইসিইউ উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু কোনও কারণে তা চালু হচ্ছে না। এতে সরকারের কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে প্রতিনিয়তই বঞ্চিত হচ্ছে।’ 

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ মাহ্ফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে আইসিইউ চালু করা যাচ্ছে না। যন্ত্রপাতি নষ্টের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বারবার জানানো হয়েছে। এক্সপার্ট ছাড়া যন্ত্রপাতির বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, ‘আইসিইউ চালুর বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক বারবার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আইসিইউ চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’