জামালপুরের পাঁচ এমপির তিন জনই নতুন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরের পাঁচটি সংসদীয় আসনের চারটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে তিন জনই প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। 

রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাতে জামালপুর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান তার সভাকক্ষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জও বকশীগঞ্জ উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নূর মোহাম্মদ ২ লাখ ২৮ হাজার ২৪৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য পদে বিজয় অর্জন করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী লাঙল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম আবু সায়েম পেয়েছেন ৬ হাজার ৭০ ভোট। এই আসনে গড়ে ৬০ দশমিক ০৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।

জামালপুর- ২ (ইসলামপুর উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল ৭০ হাজার ৭৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এবার নিয়ে টানা চতুর্থ বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শাহিনুজ্জামান শাহীন কাঁচি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৫৪৮ ভোট। এই আসনটিতে ভোট পড়েছে গড়ে ৪২ দশমিক ৯০ শতাংশ ।

জামালপুর-৩ (মেলান্দহও মাদারগঞ্জ উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। তিনি এ নিয়ে টানা সপ্তম বারের মতো নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে বিজয় অর্জন করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী মীর সামসুল আলম লিপটন পেয়েছেন ৭ হাজার ৪৭০ ভোট। আসনটিতে ভোট কাস্ট হয়েছে গড়ে ৫৭ দশমিক ৬১ শতাংশ।
 
জামালপুর- ৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ ৫০ হাজার ৬৭৮ ভোট পেয়ে বেরসকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিও প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৬৩৮ ভোট। তাছাড়া এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন। ডা. মুরাদ হাসান ৩৭ হাজার ৪৩৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন। ভোট পড়েছে গড়ে ৪৮ দশমিক ০৮ শতাংশ।
 
জামালপুর-৫ (জামালপুর সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮৮৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। সাবেক এই আমলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে রাজনীতিতে নাম লেখালেও ভোটের মাঠে চমক দেখিয়ে প্রথম বারেই এই আসনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু পেয়েছেন ৬৫ হাজার ২৪৯ ভোট। মোট ভোটারের উপস্থিতির ভিত্তিতে ভোট গ্রহন করা হয়েছে শতকরা হিসাবে ৫৪ দশমিক ০২ শতাংশ।

রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের ৬২০টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্রসহ মোট ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে গড়ে ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।