প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বড় ভাইকে হত্যা: ছোট ভাইসহ চার জনের যাবজ্জীবন

আদালতবগুড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন বড় ভাইকে ডেকে এনে অন্যদের সহযোগিতায় গলাকেটে হত্যার মামলায় ছোট ভাইসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আসামিদের প্রত্যেককে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাফিজুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় দেন। আদালত জানান, পলাতক তিন আসামিকে গ্রেফতারের পর থেকেই তাদের সাজা কার্যকর হবে।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ভিকটিম আবদুর রহমানের ছোট ভাই ও বগুড়া সদরের ভাটকান্দি পূর্বপাড়ার মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে আয়াত আলী, তার সঙ্গি নন্দীগ্রামের কুচমা গ্রামের মৃত আরজুল্লাহর ছেলে আবদুল খালেক, একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবদুল মতিন ও সলিম উদ্দিনের ছেলে বুলু মিয়া। এদের মধ্যে শুধু আয়াত আলী হাজির ছিলেন। অন্যরা পলাতক রয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, আয়াত আলীর সঙ্গে প্রতিবেশীদের বিরোধ ছিল। তাদের ফাঁসাতে আয়াত আলী আপন বড় ভাই আবদুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তিনি এ ব্যাপারে আবদুল খালেক, আবদুল মতিন ও বুলু মিয়ার সঙ্গে যুক্তি করেন।

আয়াত আলী কবিরাজি বই দেওয়ার কথা বলে ২০০৫ সালের ২৬ এপ্রিল ভাই আবদুর রহমানকে বগুড়ার বাড়িতে ডেকে আনেন। পরিকল্পনা অনুসারে ওই দিন রাত ১টার দিকে আয়াত আলীর নেতৃত্বে আসামিরা আবদুর রহমানকে প্রতিবেশীর ধানক্ষেতে নিয়ে গলা কেটে ও শরীরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরদিন সকালে পুলিশ বগুড়া সদরের ভাটকান্দি পূর্বপাড়ার ওই ধানক্ষেত থেকে আবদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে অপর ভাই হাজি মোখলেসুর রহমান সদর থানায় মামলা করেন। সদর থানা থেকে মামলাটি তদন্ত করতে ডিবি পুলিশে দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনিরুল ইসলাম মনির ভিকটিমের ভাই আয়াত আলীসহ উল্লিখিত চারজনকে গ্রেফতার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে এদের মধ্যে আয়াত আলী ও আবদুল খালেক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরবর্তীতে আদালতে উল্লিখিত চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। জামিন নিয়ে তিন আসামি পালিয়ে যান। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য পরীক্ষা শেষে বুধবার একজনের উপস্থিতিতে চার জনকে সাজা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি নাসিমুল করিম হলি ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট শান্তা মামলা পরিচালনা করেন।

আরও পড়ুন- 

মিলারদের কারসাজিতে মোটা চালের কেজি ৪০ টাকা

নারী জেএমবি: কেউ স্বামীর প্ররোচনায়- কেউবা নিজেই

/এফএস/