রাজশাহীর মেয়রের সহকারীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

Rajshahi azahar photo-01-12-16-3 copy

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নিযাম-উল-আযীমের ব্যক্তিগত সহকারীর (পিএস) বিরুদ্ধে কোটি টাকার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ওই জমি দখল নিতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে সেখানে থাকা দোকানপাট ভেঙে ফেলে মেয়রের পিএস আজমীর আহমেদ মামুন ও তার লোকজন। পরে র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় র‌্যাব আজমীরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে। তবে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আজমীর।

নগরীর বর্ণালী মোড় এলাকার ওই ৬ শতাংশ জমি স্ত্রীর নামে কেনেন বলে দাবি করছেন স্থানীয় মোসলেম আলী। আর জমিটি পৈত্রিক সম্পত্তি বলে দাবি করছেন আজমীর আহমেদ ও তার দুই ভাই। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে চলছে উত্তেজনা চলছিল।

স্থানীয়রা জানান, জমিতে কয়েক বছর ধরে ছয়টি দোকানঘর রয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘর মোসলেম আলীর ছেলের গিটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাকি পাঁচটি থেকে ভাড়া তুলতেন তিনি। গত এপ্রিলে মেয়রের পিএস ও তার ভাই রেজমীর আহমেদ সামান এসে দোকানগুলোয় তালা দিয়ে দেন। এরপর মোসলেম আলী ফের দোকানগুলো নিজের দখলে নেন। বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাতে সামান ও মামুন শ্রমিক নিয়ে এসে দোকান ঘরগুলো ভেঙে জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে ফের ভাঙচুর চালাতে শুরু করলে র‌্যাব এসে থামিয়ে দেয়।

মোসলেম আলীর দাবি, ১৯৯৫ সালে স্থানীয় আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে ওই জমি তিনি তার স্ত্রীর নামে কিনেছেন। এরপর তিনি সেখানে মার্কেট নির্মাণ করেন। কিন্তু ওই সম্পত্তি স্বল্পমূল্যে জোর করে কিনে নেওয়া হয়েছে বলে আব্দুল মান্নানের ছেলেরা সম্প্রতি মার্কেটটি দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল। মেয়র নিযাম-উল-আযীমের প্রভাব খাটিয়ে তারা জোর করে জায়গাটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অথচ এই জমির দলিল ব্যবহার করে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৮ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে।

Rajshahi azahar photo-01-12-16-4 copy

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আজমীর আহমেদ বলেন, ‘অনেকদিন আগে মোসলেম আলীর  কাছ থেকে আমার বাবা আব্দুল মান্নান দেড় লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। টাকা নেওয়ার সময় একটি স্ট্যাম্পে মোসলেম আলী বাবার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন। স্ট্যাম্পে লেখা ছিল, যথাসময়ে টাকা পরিশোধ করতে না পারলে ওই জমি তাকে লিখে দিতে হবে। পরবর্তীতে বাবা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় জমির দলিল করে নেয় মোসলেম। বিষয়টি জানতে পেরে আমার ভাই রেজমীর আহমেদ মামলা করেছে। মামলায় আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে রেজমীর বলেন, ‘আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেওয়ায় নিজেদের জমি হিসেবেই আমরা পুরনো দোকান ভেঙে নতুন করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলাম। জমির মালিকই তো মোসলেম আলী নন, তাই তার দোকান ভাঙচুরের প্রশ্নই ওঠে না। আমার ভাই সিটি মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী। এ জন্য তারা আমার ভাইকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

মোসলেম আলীর বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রিয়ন জানিয়েছেন, বুধবার ও বৃহস্পতিবারের দোকান ভাঙচুরের ঘটনায় তার বাবা আদালতে আরও একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার বোয়ালিয়া থানায় জোর করে জমি দখলের একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরই মধ্যে এ ঘটনা ঘটলো।

/এসটি/