যৌতুক দাবি: স্ত্রীকে ঝলসে দিল স্বামী

বগুড়াবগুড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্বামীর দেওয়া ফুটন্ত পানিতে স্ত্রী রিতা খাতুনের(২৫) শরীর ঝলসে গেছে। গত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটলেও তাকে চিকিৎসা না দিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে সোমবার দুপুরে বাবা মুনছের আলী তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সোমবার রাতে ওই মেয়ের বাবা থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করলে পুলিশ জামাই রনি ও তার মা মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করে। পরে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী ও এজাহার সূত্র জানায়, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার জুমাইনগর গ্রামের মুনছের আলীর মেয়ে রিতা ডিগ্রিতে পড়ার সময় বগুড়া শাজাহানপুরের লতিফপুর মধ্যপাড়ার আবদুল মালেকের ছেলে রনির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সংসারে রোহান নামে চার বছরের ছেলে আছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিতা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত রনি যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। সর্বশেষ রনি তার কাছে আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক না দেওয়ায় তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। গত শনিবার রাতে ছেলে রোহানকে লেখা শেখানোর খাতা কিনে না দেওয়ায় স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। পরে এর জেরে তার স্বামী রনি, শাশুড়ি মমতাজ বেগম ও পরিবারের অন্যরা তাকে মারধর করে। একপর্যায়ে ফুটন্ত পানি তার শরীরে নিক্ষেপ করে। এতে তার শরীর পুড়ে যায়। পরে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। সোমবার দুপুরে মেয়ে তার ফোন পেয়ে বাবা মুনছের আলী নাটোর থেকে ছুটে আসেন। পরে তার বাবা তাকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন

শাজাহানপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই কালা চাঁদ ঘোষ জানান, যৌতুকের দাবিতে রনি তার স্ত্রী রিতাকে মারধর করে ও পরে গরম পানি নিক্ষেপ করে। এতে রিতার শরীর পুড়ে যায়। এ ঘটনায় তার বাবা সোমবার রাত ৯টার দিকে থানায় রিতার স্বামী রনি, শাশুড়ি মমতাজ বেগম, শ্বশুড় আবদুল মালেকসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় রনি ও তার মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যরা তালা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।

ওসি আবদুল্লাহ আল মাসউদ চৌধুরী জানান, গ্রেফতার দুজনকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

/এআর/