রাণীনগরের আতাইকুলা গণহত্যা দিবস আজ

নওগাঁআজ ২৫ এপ্রিল, মঙ্গলবার নওগাঁর রাণীনগরের আতাইকুলা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে গণহত্যা চালায়। আর এ হামলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে এক সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছিল ৫২জন মুক্তিকামী গ্রামবাসী।

রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরে মিরাট ইউনিয়নের নিভৃতপল্লী আতাইকুলা পালপাড়া গ্রাম। ১৯৭১ সালে ২৫ এপ্রিল দুই শতাধিক পাকিস্তানি বাহিনীর নরপশুর দল ওই দিন সকাল ৯টার দিকে এই গ্রামের পূর্বদিকে কুজাইল বাজারে অবস্থান নেয়। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ধীরে ধীরে নদী পার হয়ে আতাইকুলা গ্রাম ঘিরে ফেলে। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই গ্রামের কিছু লোক বাড়ি-ঘর ফেলে রেখে নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতীরা যে যার মতো পালানোর চেষ্টা করে।

কিন্তু স্থানীয় রাজাকার আলবদররা তাদেরকে বাধা দেয়। এরপর পালপাড়া গ্রামের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যগেশ্বর পালের বৈঠকখানার আঙ্গিনায় জড়ো করে। শুরু হয় পাকিস্তানি সেনাদের নির্যাতন। তারা সেদিন ওই গ্রামে সারাদিন ধরে ঘরে ঘরে হত্যা, লুন্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে।

পরে দিনের শেষ বিকালে বৈঠকখানার আঙিনায় বন্দিদের ওপর মেশিনগানের ব্রাশফায়ার চালানো হয়।এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান শ্রী গবিন্দ্রনাথ চরন পাল, জগেনন্দ্রনাথ, শুরেশ্বর পাল তার পুত্র প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল, শুনিল কুমার পালসহ ৫২টি তাজা প্রাণ।
শহীদ শ্রী গবিন্দ্রনাথ চরন পালের ছেলে গৌতম চরন পাল এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কর্মসূচি না নেওয়া হলেও পারিবারিক ও মুক্তিযোদ্ধারা মিলে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদের স্মৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, গীতাপাঠ ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

/এআর/