বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

আইন-আদালতবগুড়ায় পরকিয়ায় বাধা দেওয়ায় গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে সিনিয়র দায়রা জজ মো. শফিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন বগুড়া সদরের পলাশবাড়ি গ্রামের নিহত ভিকটিম শফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম (২৬) ও তার প্রেমিক পলাশবাড়ি দক্ষিণপাড়ার সামসুজ্জামান সূর্য (৩০)। রায় ঘোষণার সময় সূর্য আদালতে উপস্থিত থাকলেও নাসিমা পলাতক।

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি আবদুল মতিন ও আদালত সূত্র জানান, ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে বগুড়া সদরের পলাশবাড়ি স্কুলপাড়া গ্রামের একটি কলাবাগানে গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের ভাই শামীম হোসেন সদর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলাটিপে হত্যার কথা উল্লেখ করা হলে এসআই গোলজার হোসেন ২ সেপ্টেম্বর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। তিনি তদন্তে জানতে পারেন, ভিকটিম শফিকুল ইসলামের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণপাড়া গ্রামের সামসুজ্জামান সূর্যের আর্থিক লেনদেনের সুবাদে বাড়িতে যাতায়াত ছিল। একপর্যায়ে সূর্যের সঙ্গে শফিকুলের স্ত্রী নাসিমা বেগমে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শফিকুল ইসলাম বাড়িতে ফিরে তার স্ত্রী নাসিমা ও প্রেমিক সূর্যকে অস্বস্তিকর অবস্থায় দেখেন। তখন তিনি সূর্যকে কিলঘুষি মারেন। এরপর সূর্য ও নাসিমা ভিকটিম শফিকুল ইসলামকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর লাশ বাড়ির কাছে একটি কলাবাগানে ফেলে দেওয়া হয়।

তদন্ত চলাকালে এসআই গোলজার নাসিমা বেগম ও সূর্যকে গ্রেফতার করেন। দু’জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুর রাজ্জাক ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে নাসিমা বেগম হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপন করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এএইচএম গোলাম রব্বানী খান রোমান জানান, তারা ন্যায় বিচার পাননি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় করেন। নাসিমা তার শরীরের নির্যাতনের চিহ্ন আদালতকে অবহিত করেছিলেন। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

/বিএল/