পণ্য পরিবহন কর্মবিরতি প্রত্যাহার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত বগুড়ার কৃষকেরা

বগুড়াউত্তরাঞ্চলের বগুড়াসহ ১৬ জেলায় চলতে থাকা পণ্য পরিবহণ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হলেও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজি ভাণ্ডারখ্যাত বগুড়ার কৃষক ও বেপারিরা। রবিবার (২১ মে) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতি সরকারি হস্তক্ষেপে আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) সকাল ১১টায় প্রত্যাহার করা হয়।

গত ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই কর্মবিরতির কারণে অন্তত কোটি টাকার সবজি জেলার বাইরে যায়নি।পাইকারি বাজারে সব ধরনের সবজির মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছিল। এতে শুধু কৃষক নয়, দুই শতাধিক বেপারিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।যদিও কর্মবিরতি প্রত্যাহারে কিছুটা স্বস্তি নেমে এসেছে কৃষকদের মাঝে।

মহাস্থান হাটের মাহীসাওয়া ভাণ্ডারের মালিক আড়তদার বাদশা মিয়া জানান, কর্মবিরতির জন্য অন্যত্র পাঠাতে না পারায় বেপারিরা সবজি কেনেননি, ফলে সব ধরনের সবজির দাম নেমে এসেছিল অর্ধেকে। একই চিত্র ছিল বগুড়ার নয়মাইল, আড়িয়া, শেরপুরসহ অন্যান্য পাইকারি কাঁচা বাজারে।

বাদশা মিয়া আরও জানান, তিনি প্রতিদিন চট্টগ্রামে ২ ট্রাক ও কুমিল্লায় ১ ট্রাকে হাজার মণ কাঁচামাল (সবজি) পাঠিয়ে থাকেন। অন্যরা ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, খাগড়াছড়ি ও লাকসামসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ৩০ ট্রাকে সবজি পাঠিয়ে থাকেন। সবমিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সবজি বিভিন্ন জেলায় যায়।
তিনি জানান, গত দুদিন ট্রাক বন্ধ থাকায় বেপারিরা কৃষকদের কাছে সবজি কেনেননি। সামান্য কিছু কিনলেও অতিরিক্ত ভাড়ায় নাইটকোচের ছাদে ও পত্রিকাবাহী ট্রাকে শুধু ঢাকায় পাঠিয়েছেন। রাস্তায় জ্যাম থাকায় কিছু সবজি পচে গেছে।

মহাস্থান এবং আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের কৃষক রহমত আলী, সেকেন্দার আলী, সুরুজ মিয়া, আবদুস সামাদ, রফিকুলসহ আরও অনেকেই জানান, গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বেপারিরা তাদের কাছে পাইকারি সবজি কেনেননি। বাড়িতে নিয়ে নষ্ট হবে তাই বাধ্য হয়ে তারা অর্ধেক দামে বিক্রি করেছেন।

উল্লেখ্য,উত্তরবঙ্গ ট্রাক, ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ অধিকার আদায় বাস্তবায়ন কমিটি সাত দফা দাবি আদায়ে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টার পণ্য পরিবহন কর্মবিরতির ডাক দেয়। এ অচলাবস্থা নিরসনে সরকারিভাবে কেউ তাদের না ডাকায় বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা কর্মবিরতি বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

/এসএস/এআর/