অষ্টমবারের মতো পাউবো’র ‘চৌহালী নদী তীর রক্ষা’ বাঁধে ধস

 তীর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন সেতুর উভয় পাশে প্রায় ২০ মিটার মাটির রাস্থা ধসে গেছে( ছবি- সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি)

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা সদরে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাউবোর নির্মাণাধীন ৭ কিলোমিটার ‘নদী তীর রক্ষা বাঁধটি’তে আবার ধস দেখা দিয়েছে। বুধবার সকালে প্রবল ঘূর্ণাবর্তের কারণে বাঁধটিতে অষ্টমবারের মতো ধস দেখা দেয়। যে কারণে।  

এই ধসের কারণে শতাধিক ঘরবাড়ি ও বসতভিটা হুমকির মুখে পড়েছে। বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে উপজেলার খাস কাউলিয়া এলাকার আজিমুদ্দিন মোড়ে এ ধস দেখা দেয়। ব্রিজের উভয় পাশ ধসে অন্তত ১০টি গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে শত শত মানুষ।

এর আগে ৮ বার ধসের কারণে তীর রক্ষা বাঁধের দু’শ মিটার অংশ যমুনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বার বার ধসের কারণে তীর রক্ষা বাঁধটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে পাউবো। এর আগে সাত বার ধসের সময় পাউবো তাৎক্ষণিকভাবে জিওব্যাগ ও বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা নিলেও, এবার বুধবার বিকেল পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

অন্যদিকে, গত ১৭ জুলাই সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকায় পাউবোর একটি রিং বাঁধের ধসের স্থান পরিদর্শনে এসে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘দেশে পাউবোর হাজার হাজার বাঁধ রয়েছে। বর্ষা মৌশুমে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধ ভাঙা সাধারণ বিষয়। সেখানে ধ্স দেখা গেছে সেখানেই তাৎক্ষণিকভাবে পাউবো থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকালে খাসলিয়ার আজিমুদ্দিন মোড়ে ব্রিজের উভয়পাশে বাঁধ ধসে অন্তত ১০টি গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শত শত বাড়িঘর হুমকির মধ্যে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গেলেও বিকেলে পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে পাউবো থেকে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বলেন, ‘চৌহালী নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বাইরে একটি সংযোগ সড়কের সেতুর উভয় পাশ ধসে গেছে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়নি। ওই স্থানে জিওব্যাগ বা বালির বস্তা ফেলার জন্য বাজেট ও অনুমোদন কোনটাই নেই ‘

প্রসঙ্গত, দাতা সংস্থা ও দেশীয় অর্থায়নে ‘ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরৌশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ (এফআরইআরএমআইটি) নামে প্রকল্পের অধীনে সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় প্রায় ৮৬৮ কোটি টাকা ব্যায়ে এ ধরনের বেশ কয়েকটি তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। এরই অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালীতে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার  দৈর্ঘ্য নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার বিশাল জনপথকে যমুনার ভাঙন থেকে রক্ষা করা।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়া চলছে: আইনমন্ত্রী