চৌহালী তীর রক্ষা বাঁধে এত ধস!

চৌহালী নদী তীর রক্ষা বাঁধে ধসসিরাজগঞ্জে নির্মাণাধীন ‘চৌহালী নদী তীর রক্ষা বাঁধ’-এর খাসকাউলিয়া মিয়াপাড়ায় বুধবার (২৬ জুলাই) সকালে আবারও ২০ মিটার এলাকা জুড়ে ধস দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গত ৩ মাসে একই বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ১১ থেকে ১২ বার ধস দেখা দিলো। সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা রক্ষায় ৭ কি.মি. দৈর্ঘের এ বাঁধে দফায় দফায় ধসে এ পর্যন্ত প্রায় ৪’শ থেকে ৫’শ মিটার অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়। বারবার ধসের কারণে পাউবোর এ তীর রক্ষা বাঁধ শেষ পর্যন্ত টিকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। চৌহালী উপজেলা প্রশাসন এবং খোদ পাউবো এখন এ বাঁধ নিয়ে সন্ধিহান।

বারবার ধসের কারণে নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, আলিয়া মাদ্রাসা, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, এসবি এম মহিলা কলেজ এবং বালিকা বিদ্যালয়। সিরাজগঞ্জর মানচিত্র থেকে চৌহালী উপজেলা শেষ পর্যন্ত হারিয়ে না যায় এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

২০১৫ সালে যমুনা নদীর ভাঙন থেকে টাঙ্গাইল, নাগরপুর ও চৌহালী রক্ষায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। গত ২ মে থেকে এ প্রকল্পটির ধ্বস শুরু হয়েছে। সর্বশেষ বুধবার সকালে খাসকাউলিয়া মিয়াপাড়া অংশে আরও প্রায় ২০ মিটার ধসে যায়।

চৌহালী নদী তীর রক্ষা বাঁধে ধসচৌহালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বাঁধটি আদৌও টিকবে কিনা, তা নিয়ে এলাকাবাসীর পাশাপাশি চৌহালী উপজেলা প্রশাসনসহ খোদ পাউবো এখন সন্ধিহান হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদেকুর রহমান বলেন, এ তীর রক্ষা বাঁধে বার বার ধসের কারণে পাউবোর লোকজন আর দেখতে আসেন না।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ বুধবার বিকালে বলেন, ‘বার বার ধসের কারণে আমরাও বিব্রত। বিষয়টি পাউবোর ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালককে অবহিত করা ছাড়া এখন আর কোনও উপায় নেই।’

প্রসঙ্গত, দাতা সংস্থা ও দেশীয় অর্থায়নে ‘ফ্লাড অ্যান্ড রিভার ব্যাংক ইরেসন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’ (এফআরইআরএমআইটি) নামক প্রকল্পের অধীনে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালীতে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ কি.মি. দৈর্ঘের নদীর তীর রক্ষা বাঁধ তৈরি করা হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার বিশাল জনপদ যমুনার ভাঙন থেকে রক্ষা করা। এই প্রকল্পের অধীনে চৌহালীতে ২০১৫ সালে শুরু প্রায় ৭ কি.মি. দৈর্ঘের তীর রক্ষা বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি রয়েছে বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের কাজে কিছু কিছু অংশে জিওব্যাগ নিক্ষেপের মাধ্যমে বাঁধ টেকসই করা। পরপর ১১/১২ বার ধসের কারণে তীর রক্ষা বাঁধ আদৌ কতটুকু কার্যকরি হয়েছে তা নিয়ে সন্ধিহান স্থানীয়রা।

/বিএল/