উত্তরা গণভবন: ১৮ হাজারের কথা বলে কাটা হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকার গাছ

উত্তরা গণভবনে কেটে ফেলা গাছ (ছবি: নাটোর প্রতিনিধি)প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবনে ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১৮ হাজার টাকার গাছ কাটার কথা বলে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকার গাছ কাটা হয়েছে। অবৈধভাবে গাছ কাটার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কমিটি। সন্ধ্যার পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তদন্ত কমিটি প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলামসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তদন্ত কমিটি প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলাম জানান, গণপূর্ত বিভাগ উত্তরা গণভবনে ঝড়ে উপড়ে যাওয়া গাছ এবং মরা-পচা ডাল বিক্রির যে টেন্ডার দেয় এবং বন বিভাগের কর্মকর্তা যেভাবে মূল্যায়ণ করেছেন সে হিসেবে ১৮ হাজার ৫০৮ টাকায় বিক্রি করলে তা সঠিক ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সোহেল ফায়সাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান আকন্দসহ উত্তরা গণভবনে কর্মরত গণপূর্ত বিভাগের কিছু কর্মচারীর যোগসাজসে টেন্ডার বহির্ভূতভাবে বিরল প্রজাতির ১৭টি তাজা গাছ এবং অন্যান্য গাছের ৪৩টি বড় ডাল কেটেছে। যার মূল্য ধরা হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। এবিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান আকন্দসহ মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।উত্তরা গণভবনে কেটে ফেলা গাছ (ছবি: নাটোর প্রতিনিধি)

এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাকুল ইসলাম দাবি করেন, ইতোমধ্যে অবৈধভাবে কাটা গাছ ও ডালগুলোর কিছু গণভবনের ভেতর জব্দ করা হয়েছে। আর বেশ কিছু কাঠ ও জ্বালানি গণভবন থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে জেলার সিংড়া উপজেলা ও গণভবনের সামনের আম বাগানে বেশ কিছু জ্বালানি ও কাঠ জব্দ করেছে।

জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, গণভবনের টেন্ডারবহির্ভূত গাছ কাটা ও বিক্রি করার ঘটনায় গত ১৭ অক্টোবর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজ্জাকুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে সোমবার বিকালে তাকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি চেয়ে রাতেই তিনি তদন্ত প্রতিবেদনের সফট কপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও  জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে পাঠাবেন। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) এই তদন্ত প্রতিবেদনের হার্ডকপি পাঠানো হবে। এ বিষয়ে আরও আলোচনা ও সুপারিশ গ্রহণের জন্য রাতেই গণভবন সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ সংযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশনা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন- 

উত্তরা গণভবনে গাছ কাটা ‘যৌক্তিক’ দাবি গণপূর্তের

উত্তরা গণভবনের গাছ কাটায় ‘সমুদ্র চুরি’: তদন্ত কমিটি