অনলাইন ফলাফলে ফেল, মার্কশিটে পাস!

রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরাঅনলাইনে প্রকাশিত ফলাফলে ফেল থাকলেও মার্কশিটে পাস করেছেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ১০ শিক্ষার্থী। তারা অভিযোগ করেছেন, যে রকম পরীক্ষা দিয়েছেন সে অনুযায়ী তাদের ফেল করার কথা না। ফল পুনর্মূল্যায়নের জন্য গেলে টাকার বিনিময়ে তাদের পাস দেখিয়ে মার্কশিট দেওয়া হয়। তবে অনলাইনে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য চাহিদা মোতাবেক অর্থ পরিশোধ না করায় ফলাফল আটকে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দুর্গাপুর পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ তোলেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন-মশিউর রহমান, আবু সাঈদ, নান্টু ইসলাম, শাহীন আলম, শামিম উদ্দিন, সৈকত হোসেন, মাসুদ রানা, সুমাইয়া খাতুন, আবু রাসেল রাজু ও বৃষ্টি খাতুন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় ১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এরপর ফলাফল প্রকাশিত হলে অনলাইনে ফেল দেখায়। এরপর পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করলে সরাসরি ফেল দেখায়। কিন্তু তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ প্রশ্নপত্র নিজেরাই হিসাব-নিকাশ করে দেখেন ফেলের কোনও আশঙ্কা নেই।

শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ফলের বিষয়ে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের কাছে যাই এবং বিষয়গুলো উপস্থাপন করি। তখন তার নির্দেশনা মোতাবেক সনদ লেখক মো. জাহিদুর রহমান ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করি। তখন তারা আমাদের ১০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন লাখ টাকা (জনপ্রতি ৩০ হাজার) সালামি দাবি করেন। আমরা উচ্চতর শ্রেণিতে ভর্তির লক্ষ্যে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় পরবর্তীতে দুই লাখ টাকা দেই। এরপর আমাদের কাছে পাঠানো মার্কশিটে পাস থাকলেও অনলাইন ফলাফলে ফেল দেখানোয় কোথাও ভর্তি হতে পারছি না। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আবারও দেখা করি। তখন তারা বলেন বাকি এক লাখ টাকা পরিশোধ না করায় অনলাইন ফলাফলে এখনও পাস দেখানো হচ্ছে না।’ তারা এ ঘটনায় তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করছেন।  

টাকা দিয়ে ফল পরিবর্তন করতে যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে শিক্ষার্থীরা জানান, ‘আমাদের এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তিনি বলেন এভাবে গেলে ফলাফল বদলে যায়। আসলে উচ্চত্তর শিক্ষাগ্রহণের অন্য আমরা এত কিছু ভাবিনি।’

এদিকে এ ঘটনায় পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের পক্ষে এস নাহার খাতুন নামের এক অভিভাবক বুধবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের সচিব আলমগীর হোসেন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এছাড়াও পৃথকভাবে পুরাণ তাহিরপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী নান্টু ইসলাম ও মশিউর রহমান লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বাকাশিবো) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল কুমার পালের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।