এদিকে গত মৌসুমে এ অঞ্চলের যেসব কৃষক কোল্ডস্টোরেজে আলু রেখেছিলেন, এখন বাজারে দাম কম থাকায় তারা আর আলু বের করেননি। ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আলু স্টোরেজে রাখার জন্য কৃষকদের দিতে হয় ৭শ’ টাকা করে। কিন্তু এখন আলু নিতে গেলে দিতে হবে এক হাজার টাকা। আর বর্তমানে বাজারে আলুর দামও তুলনামূলক অনেক কম। তাই উল্টো ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ আলী বলেন, ‘এ বছর কাঠিলাল ও হল্যান্ডের আলু চাষ করেছি। কিন্তু আলু তোলার পর আলুর গায়ে কালো দাগ আর পচন দেখা যাচ্ছে। এজন্য সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। আবার বিঘাপতি ৫০-৬০ মণ আলু হওয়ার কথা থাকলেও এবার ফলন হয়েছে ৩০-৩৫ মণ।’
সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর গ্রামের আলু চাষি আইজুর রহমান বলেন, ‘এবছর আলুতে লাভ হবে না। বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ মণ আশা করা হলেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। একদিকে আলুর ফলন কম। তারপর আবার আলুর গায়ে দাগ আর পচন দেখা দিয়েছে। আবার বাজারে দামও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এবার আলুতে লোকসান হবে।’
নওগাঁর রাণীনগরের আলু ব্যবসায়ী সুলতানুর হক বলেন, ‘এবার কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু তুললে বস্তাপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকার মতো লস হবে। তাই ৭৫ মণ আলু এখনও কোল্ডস্টোরেজ থেকে তুলিনি।’
মান্দার সাবাইহাট গ্রামের কৃষক এনামুল হক জানান, তার জমিতে এবার ২৫ মণ আলু হয়েছে। আবার আলুর গায়ে দাগ আর পচন থাকায় দামও কম। সেজন্য আগামী বছর থেকে তিনি আর আলু চাষ নাও করতে পারেন।
মান্দার কুলিরহাট গ্রামের আলু চাষী আইজার আলী জানান, তিনি টাকা ধার নিয়ে আলু চাষ করেছেন। কিন্তু আলুর গায়ে দাগ ও বাজারে আলুর দাম কম থাকায় লাভ তো হবে না বরং ধারের টাকা শোধ করবেন কিভাবে তা নিয়ে তিনি চিন্তায় আছেন।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমাণিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বছর জেলায় আলু চাষ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে। যেখানে এ বছর কমে হয়েছে প্রায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে। একদিকে বন্যা কবলিত জমিতে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে অতিবৃষ্টির কারণে এবারে ফলন বিপর্যয় হয়েছে।’ আর্দ্রতা
তিনি আরও জানান, আলুর গায়ে দাগ ও পচন রোধে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।