২০ বছরেও লাভের মুখ দেখেনি পাবনা সুগার মিলস

পাবনা সুগার মিলস

প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২০ বছরেও লাভের মুখ দেখেনি পাবনা সুগার মিল। উল্টো এখন পর্যন্ত ৩৪৫ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। তবে এতদিনেও লোকসান ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন মিলের কর্মকর্তারা।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের দাশুড়িয়ায় পাবনা সুগার মিলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ সালে মিলটি বাণিজ্যিকভাবে আখ মাড়াই শুরু করে। মিলে দৈনিক ১৫০ টন আখ মাড়াই করা যায়। আর মিলটির চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার টন। তবে উৎপাদনের শুরুর বছর থেকেই লোকসানের মুখে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২০ বছরে এই লোকসানের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা।

পাবনা আখ চাষি সমিতির সদস্য বাদশা মিয়া জানান, সুগার মিল কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর লোকসানের পর নানা কারণ সামনে আনেন। তবে ২০ বছরেও কারণগুলো সমাধান করে লাভের মুখ দেখাতে পারেননি তারা। মিলের সক্ষমতা থাকার পরও এভাবে লোকসানের বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

পাবনা সুগার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সমজিৎ পাল জানান, পাবনায় যে আখ উৎপাদন হয়, তাতে রসের পরিমাণ অনেক বেশি। এছাড়া বিদেশ থেকে আমদানি করা চিনির চেয়ে এই রসের চিনিও অনেক বেশি মিষ্টি। তবে মিলে উৎপাদিত চিনি সামান্য লালচে। এ কারণে ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা চিনি কিনতেই ব্যবসায়ীরা বেশি আগ্রহ দেখায়। তবে এটা পাবনা সুগার মিলে লোকসানের মূল কারণ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মিল কর্তৃপক্ষ বলছেন, লোকসান এড়াতে হলে নতুন জমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি মাড়াই যন্ত্র, মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্ট, সুগার রিফাইন্ড করার প্ল্যান্ট, বায়োফার্টিলাইজার প্ল্যান্ট ইত্যাদি স্থাপন করা প্রয়োজন। কিন্তু এসব করতে গেলে আরও বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, মিলের জন্য প্রয়োজনীয় আখ উৎপাদন করতে আরও জমি প্রয়োজন। এরই মধ্যে সুগার রিফাইন্ড প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন ঘটানো গেলেই মিলটি লাভের মুখ দেখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।