অধ্যাপক রেজাউল হত্যায় জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড দাবি

রাবিতে মিছিলরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তার  পরিবার। সোমবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ কলাভবনের সামনে ‘মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চ’-এ আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশ থেকে তারা এ দাবি জানান।

সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামি ক্রসফায়ারে মারা গেছে বলে আমরা শুনেছি। কিন্তু তারা সত্যিই অপরাধী ছিল কি না, তা জানা নেই। আদালতের বিচারে যারা অপরাধী প্রমাণিত হবে শুধু তারাই যেন শাস্তি পায়।’

সমাবেশে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ এফ এম মাসউদ আখতার অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া সমাবেশে অধ্যাপক রেজাউলের মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি ও ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ উপস্থিত ছিলেন। অধ্যাপক রেজাউল হত্যার বিচার দাবিতে চলমান আন্দোলনে পাশে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান রিজওয়ানা হাসিন শতভি।

এর আগে সকাল ১০টায় বিভাগের সামনে থেকে এক র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফের সেখানে এসে সমাবেশ করে। র‌্যালিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শহীদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, আজ সোমবার সন্ধ্যায় মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হবে বলেও ইংরেজি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহী নগরীর শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয় রাবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। তিনি ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও উপদেষ্টা ছিলেন। অধ্যাপক রেজাউল  একটি গানের স্কুল প্রতিষ্ঠারও চেষ্টা করছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর আট জনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে খায়রুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান ও তারেক হাসান ওরফে নিলু ওরফে ওসমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যরা হলো-বগুড়ার শিবগঞ্জের মাসকাওয়াত হাসান ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে সাকিব, নীলফামারির মিয়াপাড়ার রহমত উল্লাহ, রাজশাহী মহানগরীর নারিকেলবাড়িয়া এলাকার আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী, রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শরিফুল এখনও পলাতক। আবদুস সাত্তার রয়েছে জামিনে। আর বাকি আসামিরা কারাগারে। এদিকে, আগামী ৮ মে মামলার রায় ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে।