পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এ ছাড়া, এ মামলায় ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের তিনলাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুইবছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের একলাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও একবছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩ জুন) বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলী এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির আসামিরা হলেন—ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোকলেছুর রহমান বাবলু, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক একেএম আকতারুজ্জামান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, পৌর যুবদলের সভাপতি মোস্তফা নূরে আলম শ্যামল, বিএনপি নেতা মাহবুবুল রহমান পলাশ, শামছুল আলম, শহীদুল ইসলাম অটল, রেজাউল করিম শাহীন ও আজিজুর রহমান শাহীন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন—আমিনুল ইসলাম (পলাতক), আজাদ হোসেন ওরফে খোকন, ইসমাইল হোসেন জুয়েল, আলাউদ্দিন বিশ্বাস, শামসুর রহমান শিমু, আনিসুর রহমান সেকম (পলাতক), আক্কেল আলী, মো. রবি (পলাতক), মো. এনাম, আবুল কাশেম হালট (পলাতক), কালা বাবু (পলাতক), মামুন (পলাতক),সেলিম, কল্লল, তুহিন, শাহ আলম লিটন, আব্দুল্লাহ আল মামুন রিপন, লাইজু (পলাতক), আব্দুল জব্বার, পলাশ, হাকিম উদ্দিন টেনু, আলমগীর, আবুল কালাম (পলাতক) ও একেএম ফিরোজুল ইসলাম পায়েল।
১০ বছর করে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন—ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, ঈশ্বরদী পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, বিএনপি নেতা রন রিয়াজী (পলাতক), আজমল হোসেন ডাবলু, মুক্তার হোসেন, হাফিজুর রহমান ওরফে মুকুল, হুমায়ুন কবির দুলাল, তুহিন বিন সিদ্দিকী, ফজলুর রহমান, চাঁদ আলী (পলাতক), এনামুল কবির, জামরুল (পলাতক) ও বরকত।
জানা যায়, এই মামলায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন আসামি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন ১৪ জন এবং মারা গেছেন পাঁচ আসামি।
আসামি পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম গেদা ও অ্যাডভোকেট সনৎ কুমার সরকার। পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম শামসুল হুদা। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ এ রায় ঘোষণা করা হলো।’
মামলায় রায় ঘোষণার পর বিচারক আদালতে উপস্থিত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের পর রায়ের কার্যকারিতা শুরু হবে।