শাহজাদপুরের সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতির প্রতিবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে

ঘুষের টাকা নিচ্ছেন সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মীরাসিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের আলোচিত ঘটনায় জেলা রেজিস্ট্রারের তদন্ত প্রতিবেদন ইনস্পেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রারের (আইজিআর) কার্যালয় থেকে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এদিকে জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে শাহজাদপুরের সাব রেজিস্ট্রার অফিসের তিন জনকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদনটি সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আইজিআর-এর কার্যালয়ে পাঠান। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইজিআর-এর পৃথক সুপারিশসহ সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সুপারিশে সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসকে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছেন আইজিআর নিজেও।

আইজিআর ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের পার পাবার কোনও সুযোগ নেই। জেলা রেজিস্ট্রারের তদন্ত প্রতিবেদন সুপারিশসহ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রার যে ধরনের সুপারিশ করেছেন, একই ধরনের আরেকটি পৃথক সুপারিশসহ আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকবে। খুব শিগগিরই সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার ঘোষও শাস্তি পাবেন বলেও মন্তব্য তার।’

এদিকে, সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রক্রিয়াগত কিছুটা বিলম্ব হলেও তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে ও আইজিআর’র নির্দেশে আপাতত শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের তিন দুর্নীতিবাজ কর্মচারীকে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করা হয়েছে।

জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাদের তিন জনকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আদেশপত্রটি রবিবার বিকালে শাহজাদপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার বিকালে জেলা রেজিস্ট্রার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড হওয়া কর্মচারীরা হলেন শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মহরার আব্দুস সালাম, নকল নবিশ সুমন আহম্মেদ ও দৈনিক মজুরির চুক্তিতে অফিস সহায়ক আনিছুর রহমান।

জমির দাতা-দলিল গ্রহীতাদের থেকে অবাধে ঘুষ গ্রহণ, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধিতে সহায়তা, জমির প্রকৃত বাজার মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, কতিপয় অসাধু দলিল লেখকের সঙ্গে ঘুষের ভাগবাটোয়ারা, ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি ছাড়া দলিল সম্পাদন বন্ধ রেখে অফিসে সংবাদ সম্মেলন ও গাছ বিক্রির অভিযোগে সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ চার জনের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তদন্তে সবাই দোষী প্রমাণ হলে সাময়িক বরখাস্ত ও তাদের বিভাগীয় শাস্তির জন্য আইজিআর বরাবর সুপারিশ পাঠান জেলা রেজিস্ট্রার।

প্রসঙ্গত, সাব রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ তার সহযোগীদের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল করেন শাহজাদপুরের ভুক্তভোগী সোহেল রানা। ভিডিও ভাইরাল নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

আরও পড়ুন:
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত শুরু (ভিডিও)