চিনিকলের বর্জ্যে নদীর পানি কালচে, দুর্ভোগে ৫০ হাজার মানুষ

চিনিকলের বর্জ্যে কালচে হয়ে গেছে তুলশীগঙ্গা নদীর পানিজয়পুরহাট চিনিকলের অপরিশোধিত বর্জ্য নিঃসৃত পানিতে তুলশীগঙ্গা নদীর পানির রং পরিবর্তন হয়ে কালচে হয়ে গেছে। পানি দূষিত হওয়ায় মরে যাচ্ছে মাছ। গৃহস্থালি ও কৃষিকাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না পানি। ময়লা পানিতে মশা-মাছিরও উপদ্রবও বেড়েছে। বর্জ্য মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়েছেন ২০ গ্রামের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ। এই পানিতে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটলেও মানতে নারাজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, চিনিকলের অপসারিত পানি জমা হয় তাদের নিজস্ব ক্যানেলে।

১৯৬১ সালে নির্মিত জয়পুরহাট চিনিকল বর্জ্য শোধনাগার ছাড়াই চিনি উৎপাদন করছে। শুরু থেকেই তারা এ কাজ করছে। চিনিকল থেকে একটি নর্দমার মাধ্যমে অপরিশোধিত বর্জ্য নিঃসৃত পানি অপসারণ করা হয়। সেই পানি খাল-বিল হয়ে মিশে তুলশীগঙ্গা নদীতে। এতে নদীর পানি কালচে হয়ে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দুর্গন্ধে চরম অসুবিধায় পড়েছে স্থানীয়রা।

আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামের নদী পাড়ের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, সুগার মিল চালু হওয়ার পর নদীর পানি কালো হয়ে গেছে। এজন্য আমরা নদীর পানি সংসারের কাজে ব্যবহার করতে পারি না।

ক্যানেল দিয়ে যাচ্ছে চিনিকলের বর্জ্যএকই এলাকার কৃষক আবদুল খালেক বলেন, চিনিকলের ময়লা পানি জামালগঞ্জ খাল দিয়ে শ্রী খালে এসে পড়ে। আর শ্রী খালের পানি যায় তুলশীগঙ্গা নদীতে। ফলে নদীর পানি কালচে হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে মাছও মারা যাচ্ছে। ওই পানি কৃষি কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন আকন্দ বলেন, ‘চিনিকলের বর্জ্যে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে অথবা মাছ মরছে একথা ঠিক নয়। চিনিকলের দূষিত পানি সংরক্ষণের জন্য আমরা পৃথক ক্যানেল করেছি। বাকি যে পানি বাইরে যায়, তা দূষিত নয়।’

তিনি বলেন, ‘পোল্ট্রি, হ্যাচারি ও চালকলের বর্জ্য নিঃসৃত পানি থেকে পরিবেশ দূষণ হলেও দায়ী করা হয় শুধু চিনিকলকে। আমরা পানি শোধনাগারের অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন করেছি। মেশিনপত্র আসা মাত্র এটি চালু হবে। তখন বোঝা যাবে পরিবেশ দূষণের জন্য কারা দায়ী।’