আইসিজের রায়ে রোহিঙ্গা সমস্যার কার্যকরী সমাধান নেই: নাসিম



Sirajgonj Photo-1 (Nasim) 25.01.2020রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে কার্যকরী কোনও সমাধান নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ের মুলিবাড়িতে শহীদ এম মনসুর আলীর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে তিনি সেখানে যান।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইসিজের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ সম্পর্কে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আদালতের (আইসিজে) রায়ে অন্তবর্তীকালীন যে চারটি ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থার কথা বলা হয়নি। আদালত আদেশে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের স্পষ্ট কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেই। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ারও কোনও নির্দেশনা বা আদেশ নেই। তবু্ও আন্তর্জাতিক আদালতে এ ধরণের বিচার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করি।’

এসময় মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চি এর ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা অতিরঞ্জিত’ মন্তব্যেরও নিন্দা জানান নাসিম।

অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ পান্না, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক মোল্লাসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইনে হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করলে জীবন বাঁচাতে নতুন করে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও সংঘাত আরও তীব্রতর না হওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানায় দেশটি। এরপর আইসিজের বিচারক রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ঘোষণা করেন। এগুলো হলো: এক. রোহিঙ্গাদের হত্যা, মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন ও ইচ্ছা করে আঘাত করতে পারবে না। দুই. গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা। তিন. গণহত্যা কিংবা গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ। চার. মিয়ানমারকে অবশ্যই ৪ মাসের মধ্যে লিখিত জমা দিতে হবে, তারা সেখানে পরিস্থিতি উন্নয়নে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এরপর প্রতি ৬ মাসের মধ্যে আবার প্রতিবেদন দেবে।