৯৩ বছরের রাহেলার ঠাঁই গোয়ালঘরের পাশে!

রাহেলা বেওয়ার ঘরবৃদ্ধ রাহেলা বেওয়ার জীবন কাটছে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের ওপর বানানো অস্থায়ী ঝুপড়ি ঘরে। পাশেই রয়েছে গোয়ালঘর। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর হতদরিদ্র রাহেলার জীবন কাটছে অযত্ন আর অবহেলায়। নিজের কোনও জমি নেই। মোশাররফ নামে গ্রাম সম্পর্কের এক ভাই তাকে থাকতে দিয়েছেন সেপটিক ট্যাংকের ওপর। যার পাশেই গোয়ালঘর। স্বামী মাক্কেছ আলী মারা গেছেন অনেক আগে। বিধবা ভাতার বিনিময়ে খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে রেশমা বেগম।

এভাবেই জীবন কাটছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার জামুহালি গ্রামের ৯৩ বছর বয়সের বিধবা রাহেলা বেওয়ার। গ্রামের ইউপি সদস্যের করে দেওয়া বিধবা ভাতার কার্ডই এখন তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। নিজস্ব জায়গা না থাকায় সরকারি অনুদানে বাড়ি পাওয়ার সুযোগও নেই।

রাহেলা বেওয়া বলেন, ‘আমার কেউ নেই বাবা। আমি একা থাকি এখানে। খুব গন্ধ লাগে। পাশেই গরু থাকে। সেখান থেকেও গন্ধ আসে। খুবই কষ্ট। আল্লাহও আমারে নেয় না।’

রাহেলা বেওয়াতিন বেলা খাবার দেওয়া রেশমা বেগম বলেন, ‘তাকে দেখাশোনা বা খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই। সহায় সম্বল বলতে তার কিছুই নেই। একমাত্র মেয়ের বিয়েও হয়েছে হতদরিদ্র পরিবারে। তিনবেলা খাওয়াসহ আমরা তার দেখাশোনা করি। বয়সের কারণে সবকিছু গুছিয়ে বলতেও পারেন না।’

ক্ষেতলাল ডায়াবেটিক সমিতির সমন্বয়ক ওই গ্রামের আজিজুল হক বলেন, ‘অশীতিপর বৃদ্ধা রাহেলা বেওয়াকে সহযোগিতা করার কেউ নেই। এই মুহূর্তে জনপ্রতিনিধি অথবা বিত্তবানদের সাহায্য ছাড়া তার অবস্থার উন্নতি অসম্ভব।’

রাহেলার দুর্বিষহ জীবনের কথা শুনে খোঁজ নিতে মঙ্গলবার (৭্ এপ্রিল) দুপুরে ওই গ্রামে হাজির হন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান। রাহেলার খবর নিয়ে নিজের বেতন থেকে তার হাতে ৭০০ টাকাও তুলে দেন তিনি। পরে তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ করে দুই শতক জায়গা পেলে সরকারি অনুদানে রাহেলাকে বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।