গাছে বেঁধে স্ত্রীর গায়ে গরম রডের ছ্যাঁকা!

জয়পুরহাটজয়পুরহাটে স্ত্রীকে লিচু গাছের সঙ্গে বেঁধে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম লোহার রডের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার (২৭ মে) রাতে জেলার আক্কেলপুর পৌর শহরের শ্রীকৃষ্টপুর স্কুলপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে ওই গৃহবধূর বাবা আইয়ুব আলী আক্কেলপুর থানায় মামলা করলে পুলিশ স্বামী শাকিল হোসেন এবং তার বড় ভাই (গৃহবধূর ভাসুর) আসলাম হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।

স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে গৃহবধূ খাদিজা খাতুনকে (২০) তার স্বামী গাছের সঙ্গে বেঁধে গরম লোহার রড দিয়ে ছ্যাঁকা দিচ্ছিল। এ সময় খাদিজার শ্বশুর-শাশুড়ি উপস্থিত থাকলেও ছেলেকে বাধা না দিয়ে উসকে দেয়। খাদিজার চিৎকারে প্রতিবেশীরা বাড়ির গেট ভেঙে তাকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

নির্যাতনের শিকার খাদিজা বলেন, ‘আমার তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। সান্তাহারের লকু কলোনিতে আমার বাবার বাড়ি। স্বামী শাকিল হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ করে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে সহ্য করতে পারে না। শ্বশুর-শাশুড়ির উসকানিতে সে বিভিন্ন সময় আমাকে মারধর করতো। বুধবার রাতে বাড়িতে ফিরে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই রান্না খারাপ হয়েছে বলে আমাকে মারধর করতে করতে লিচু গাছতলায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আমাকে লিচু গাছের সঙ্গে হাত বেঁধে ফেলে। তখন শ্বশুর-শাশুড়ি উঠানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্বামী গরম লোহার রড দিয়ে আমার দুই গালে, দুই হাতে ও পায়ে ছ্যাঁকা দিতে থাকে। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি চিৎকার শুরু করি এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।'

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হক বলেন, 'গৃহবধূর গাল, হাত ও পায়ে গরম ছ্যাঁকার ক্ষত রয়েছে। তার স্বামী এ কাজ করেছে বলে গৃহবধূ আমাদের জানিয়েছেন।'

ওই গৃহবধূর স্বামী শাকিল হোসেন বলেন, ‘দুই দিন আগে আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এক ছেলে বউয়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। আজকে আবার ওই নম্বর থেকে মিসড কল এসেছিল। এ কারণে বউকে লিচু গাছের সঙ্গে বেঁধে নিড়ানি গরম করে ছ্যাঁকা দিয়েছি।'

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, 'এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে চার জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। স্বামী শাকিল হোসেন ও ভাসুর আসলাম হোসেনকে গ্রেফতার করেছি। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।'