‘সাম্মাম’ চাষ করে সৌদি ফেরত কৃষকের ৩ মাসে ৩ লাখ টাকা আয়

রেজাউল ইসলামের চাষ করা ‘সাম্মাম’-এর একাংশনওগাঁর আত্রাই উপজেলার সৌদি ফেরত কৃষক রেজাউল ইসলাম মরু অঞ্চলের ফল সাম্মাম চাষ করে সব খরচ বাদ দিয়ে তিন মাসে কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা আয় করেছেন। নতুন জাতের এই ফল দেখতে সেখানে প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন। অনেকেই এই ফল চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

আত্রাই উপজেলার মীরাপাড়া গ্রামে নিজের দেড় বিঘা জমিতে সৌদি আরবের জনপ্রিয় রসালো এবং সুস্বাদু এই ফলের চাষ করেন তিনি। ফলটি দেখতে অনেকটা বেল কিংবা বাতাবি লেবুর মত। ভিতরে তরমুজের মত রসালো। সৌদি থাকাকালীন রেজাউল ফলটি খেয়েছিলেন। দেশে ফিরে ফলটি চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। পরে বগুড়াস্থ এগ্রো ওয়ান কৃষি গবেষণা খামারে এই ফলের চারার সন্ধান পান।

সেখান থেকে চারা ক্রয়, জাংলা তৈরি, কীটনাশক, শ্রমিক প্রভৃতি বাবদ তার খরচ হয়েছে সর্বমোট ৬০ হাজার টাকা। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই এই গাছ থেকে ফল উৎপাদন এবং বাজারজাত করা সম্ভব হয়েছে। এই সময়ে সব খরচ বাদ দিয়ে রেজাউলের লাভ হয়েছে কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা। এসব সাম্মাম তিনি বিক্রি করেছেন বগুড়া ও ঢাকার বিভিন্ন বাজারে।

রেজাউল ইসলাম জানান, জমি থেকে এই মৌসুমে প্রায় ২ হাজার ফল উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিটি ফলের ওজন ২ থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত। বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে দেখতে আসা দর্শনার্থী এবং আত্মীয়স্বজনদের নতুন ফলটি এমনিতেই খেতে দেন তিনি।

চারা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এগ্রো ওয়ান কৃষি খামারের এক্সিকিউটিভ মো. সামিউল ইসলাম বলেন, ধানসহ গতানুগতিক ফসল উৎপাদন এখন আর লাভজনক নয়। তাই কৃষকরা প্রথাগত ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন। করোনাকালে বিকল্প ফসল হিসেবে কীভাবে কৃষকদের লাভ করানো যায় সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আমরা সাম্মামের চারা উৎপাদন করি। এই ফলের প্রতি দেশব্যাপী কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রবিয়াহ নুর আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশের ফল চাষ করে জনপ্রিয় করে তুলছেন কৃষকরা। এতে তারা একদিকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে এসব ফলের স্বাদ ও পুষ্টি গ্রহণ করতে পারছেন দেশের মানুষ। রেজাউল ইসলাম সাম্মাম চাষ করে এখন সফল।