সারিয়াকান্দিতে শিশুসহ গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় মামলা

বগুড়ার সারিয়াকান্দির দুর্গম শংকরপুর চরের ভুট্টাক্ষেতে গৃহবধূ শেফালী বেগম (২৫) ও ছয় মাসের শিশু রুমানা খাতুনকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (১ মার্চ) শেফালীর বাবা ওসমান গণি মণ্ডল অজ্ঞাতদের আসামি করে সারিয়াকান্দি থানায় এ মামলা করেন।

পুলিশের ধারণা, হত্যার আগে শেফালীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। বাধা পেয়ে দুর্বৃত্তরা দু’জনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। শিশুটির শরীরে আছাড় দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। হত্যায় জড়িত সন্দেহে শেফালীর পরিবার মারপিট করায় জামাই আল আমিন তার অপর দুই শিশু সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দুরুল হোদা জানান, নিহত মা ও মেয়ের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তাদের কীভাবে হত্যা এবং এর আগে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চত হওয়া যাবে।

এলাকাবাসী জানান, শেফালী বেগম সারিয়াকান্দি উপজেলার বোহাইল ইউনিয়নের দুর্গম শংকরপুর চরের দিনমজুর আল আমিনের স্ত্রী। তাদের দুই ছেলে সুমন (৭) ও রিপন (৫) এবং এক মেয়ে রুমানা খাতুন। ছয় মাসের রুমানা অসুস্থ হওয়ায় বাবা-মা তাকে কবিরাজের কাছে ঝাঁড়ফুঁক দেওয়ার চিন্তা করেন। শনিবার বিকালে শেফালী মেয়ে রুমানাকে নিয়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে ধারাবর্ষাচরে আইমা বেগম নামে এক নারী কবিরাজের বাড়ির দিকে রওনা দেন। এরপর মা ও মেয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন রবিবার বেলা ৩টার দিকে শংকরপুর চরের একটি ভুট্টাক্ষেতে তাদের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ রাতে লাশ দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময় নারী পুলিশ সন্দেহ করেন, হত্যার আগে শেফালীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। সোমবার লাশ দুটি বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, নিহত শেফালীর বাবা অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। তিনি আরও জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে শেফালীর পরিবারের সদস্যরা জামাই আল আমিনকে মারধর করেন। ভয়ে তিনি দুই সন্তান, পরিবারের সদস্য ও গবাদিপশু নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।

হত্যার রহস্য উদঘাটন ও ঘাতকদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে। তবে সোমবার বিকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।