শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু: মাঠ দিবসে কাটা হবে সেই জমির ধান

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান লাভ করা বগুড়ার শেরপুরের বালেন্দা গ্রামে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিকৃতি প্রকল্পের ধান কাটার উদ্বোধন হবে আগামী সোমবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ১০টায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে এর শুভ উদ্বোধন করবেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে ১০০ বিঘা জমিতে চীন থেকে আমদানি করা গাঢ় চারাতে বেগুনী ও দেশিয় সবুজ চারায় সবুজ ধানের শীষ ভারে নুইয়ে পড়েছে। পরিপুষ্ট ধান নিয়ে চারাগুলো আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। শীষগুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে। বিএনসিসি ও কৃষিবিদদের নিপুণ কারুকাজে তৈরি শস্য চিত্রের বিশাল ক্যানভাসে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটে ওঠে। এখন ধান কাটার সময় হয়ে গেছে।

উদ্যোক্তা ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ জাতীয় পরিষদের সদস্য সচিব কৃষিবিদ কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আগামী ২৬ এপ্রিল মাঠ দিবস। ওইদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটার উদ্বোধন হবে। কর্তন করা ধানগুলো বগুড়ার কাহালুতে ন্যাশনাল এগ্রি কেয়ার সিড প্রসেসিং সেন্টারে নেওয়া হবে। ধানের চারা রোপণ, সেখানে বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটে ওঠা এবং ২৬ এপ্রিল ধান কাটা সবমিলিয়ে তিনি খুব আনন্দিত।

ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ডেপুটি হেড অব অপারেশন আল আমিন ও অন্যরা জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সহযোগিতায় ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুটে তুলতে গত ২৯ জানুয়ারি শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে (১২শ’ বর্গমিটার) চীন থেকে আনা ডিপ ভায়োলেট রঙের হাইব্রিড (এফ-১) ও দেশের ডিপ গ্রিন ধানের হাইব্রিড চারা রোপণ করা হয়। এখন সেই চারাগুলো বড় হয়ে তাতে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে। সেদিন শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সদস্য সচিব কৃষিবিদ কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। প্রধান অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক ছিলেন। এ শস্যচিত্রের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছে সাত মাসের জন্য ১০০ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে। ফসল উঠার পর মে মাসের দিকে জমিগুলো ফেরত দেওয়া হবে। প্রতিদিন শত শত মানুষ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখতে প্রকল্প এলাকায় ভিড় করছেন।

এদিকে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পরিদর্শনে গত ৯ মার্চ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধি শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামের প্রকল্প এলাকায় আসেন। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ম. আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ আসেন। প্রকল্প পরিদর্শন শেষে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জন্মদিনের আগেই ১৬ মার্চ শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান লাভ করে।