শত শত মানুষের সামনে যুবকের আত্মহত্যা

বগুড়া শহরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও শত শত মানুষের উপস্থিতিতে নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচতলায় লাগানো বাঁশ থেকে লাফিয়ে টমাস সরকার (৩৮) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (৩ মে) বিকালে শহরের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বগুড়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল হালিম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এর আগে দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্র জানায়, টমাস সরকার বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত হাফিজুর রহমান সরকারের ছেলে। শহরের বড়গোলা এলাকায় নির্মাণাধীন সাততলা ভবনে প্লাস্টারের কাজ চলছিল। তিনি সোমবার বিকালের দিকে প্লাস্টারের কাজে ব্যবহৃত বাঁশ বেয়ে পাঁচতলায় ওঠেন। নির্মাণ শ্রমিকরা ওঠার কারণ জানাতে চাইলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে জানান। খবরটি জানাজানি হলে ফায়ার সার্ভিস ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। শত শত মানুষ ভবনের নিচে ভিড় করেন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে বুঝিয়ে নিচে নামাতে ব্যর্থ হলে মই দিয়ে উদ্ধারের প্রস্তুতি নেন। এ সময় টমাস সরকার হাত ছেড়ে দিলে নিচে পড়ে মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

বগুড়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল হালিম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পাঁচতলায় প্লাস্টারের কাজে লাগানো বাঁশ থেকে লাফিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন টমাস সরকার মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

টমাস সরকারের বড় ভাই বগুড়া নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী শামীম সরকার জানান, মাদক সেবন করায় আট বছর আগে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। তখন সে মানসিকভাবে আঘাত পায়। ছয় বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর থেকে টমাস মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। একটি কনস্ট্রাকশন ফার্মে চাকরি করলেও দু’মাস আগে ছেড়ে দেয়।

শামীম সরকার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার ভাই প্রায় দুই ঘণ্টা ভবনের বাঁশের ওপর দাঁড়িয়ে আত্মহত্যার কথা বললেও পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জনগণ কেউ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেনি। জনগণ দাঁড়িয়ে মজা দেখেছেন ও ভিডিও করেছেন।