কবিরাজকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা

বগুড়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে কবিরাজ ও মাদ্রাসা পরিচালক মোজাফফর হোসেন ওরফে বাবা হুজুর (৫২) নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বুধবার (৫ মে) শাজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছেন।

শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রহস্য উদঘাটনে তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঠে রয়েছেন। বুধবার সকালে নাটোরের সিংড়া থেকে অটো রিকশায় বগুড়ার বাড়ি ও কর্মস্থলে ফেরার পথে শাজাহানপুরের জোড়া এলাকায় মহাসড়কে অবস্থানকারী দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে পথরোধের পর তাকে গুলি করে হত্যা করে। ঘাতকদের মুখে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস ও মাথায় টুপি ছিল। প্রকাশ্যে গুলিতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানান, কবিরাজ মোজাফফর হোসেন নাটোরের সিংড়া উপজেলা সুকাশ ইউনিয়নের সুকাশ নওদাপাড়া গ্রামের মৃত সায়েদ মণ্ডলের ছেলে। তার দু’জন স্ত্রী ও দু’টি মেয়ে রয়েছে। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ২০১৪ সালে নিশিন্দারা ফকির উদ্দিন স্কুল ও কলেজের পাশে আল জামিয়া আল আরাবিয়া দারুল হেদায়াহ নামে একটি কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। করোনার কারণে এক বছরের বেশি মাদ্রাসা বন্ধ থাকলেও তিনি সেখানে বসে কবিরাজি চিকিৎসা করতেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা তার কাছে সেবা নিতে আসতেন। বিয়ে না হওয়া, জিন ছাড়ানো, প্রেমের সম্পর্ক অটুট, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুসম্পর্ক, সন্তানদের জিন থেকে রেহাই, নারীদের বন্ধ্যত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে টোটকা চিকিৎসা ও সমাধান দিতেন।

এছাড়া আইপিএল জুয়াড়িরা খেলার ‘ভবিষ্যৎ’ জানতে এই কবিরাজের শরণাপন্ন হতেন। কবিরাজ মোজাফফর খেলার বিভিন্ন বিষয়ের ভবিষ্যৎবাণী করতেন বলে কথিত রয়েছে। অনেক  সময় কারও ক্ষেত্রে মিলে যেতো আবার অনেক সময় মিলতো না। জুয়ায় হেরে যাওয়া কোন কোন ভক্তের সঙ্গে তার মতবিরোধ সৃষ্টি হতো। মাদ্রাসা বন্ধ থাকলেও কবিরাজি করে তিনি মোটা অংকের আয় করেন।

বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আবদুর রাজ্জাক জানান, কবিরাজ মোজাফফর হোসেন ওরফে বাবা হুজুরকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে সিএনজি চালক, সহযাত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

তিনি জানান- মাদ্রাসা পরিচালনা, কবিরাজি চিকিৎসা, আইপিএল জুয়ারিদের ভবিষ্যৎবাণী প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেলেও এখনই তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: অটো রিকশা থামিয়ে কবিরাজকে গুলি করে হত্যা