১৩৮ নিয়োগ: আবারও তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন সোবহান 

শেষ কর্মদিবসে ১৩৮ জনকে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনায় আবারও তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান।

ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে নিয়োগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০ জনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাদের অনেকেই চিঠির জবাবও দিয়েছেন। এসব জবাব পর্যালোচনা শেষে তদন্ত কমিটি রাজশাহীতে এসে নিয়োগের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। তদন্ত কমিটির একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে নিয়োগকে কেন্দ্র করে গত ৮ মে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। গত ৬ মে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৩৮ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে যান তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে এসে অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, তার জামাতা শাহেদ পারভেজসহ নিয়োগের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য শোনেন। পরবর্তী সময়ে তদন্ত কমিটি ২৩ মে প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। কিন্তু প্রতিবেদন জমা দেওয়ার এক মাসেও ব্যবস্থা না নিয়ে ২৮ জুন ফের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

এদিকে নতুন কমিটিতে আলমগীর হোসেনকে বাদ দিয়ে ইউজিসির আরেক সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজকে আহ্বায়ক করা হয়। এ ছাড়া আগের কমিটির তিন সদস্য ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ জামিলুর রহমানকে সদস্য সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ যুগ্ম সচিব জাকির হোসেন আখন্দকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়।

নতুন তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও তার জামাতা এটি এম সাহেদ পারভেজসহ নিয়োগের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০ জনকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে থাকা নিয়োগের নিয়মগুলো উল্লেখ করে অনিয়মগুলো দেখানো হয়েছে। নিয়োগে নিজের সংশ্লিষ্টার বিষয়ে চিঠির উত্তর তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দিল আফরোজকে মেইলে এবং কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক জামিনুর রহমানকে মূলকপি তিন কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়। 

চিঠির উত্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক দিল আফরোজ বেগম বলেন, আমাদের চিঠির উত্তর ইতোমধ্যে অনেকেই জমা দিয়েছেন। তবে আমরা এখনও তিন জনের জবাব পাইনি। তদন্ত কমিটির পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। 

তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মিটিং করে চিঠির জবাব নিয়ে পর্যালোচনা করবো আমরা। পরবর্তী সময়ে নিয়োগ সংশ্লিষ্ট সবার ইন্টারভিউ করবো। সেক্ষেত্রে আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে নিয়োগ নিয়ে তৈরি সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান না হলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।