ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কেন্দ্র ঘেরাও, পুলিশের লাঠিচার্জ

বগুড়ার শিবগঞ্জের দেউলী ইউনিয়নে ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় কেন্দ্র ঘেরাও করেছে প্রার্থীদের সমর্থক ও সাধারণ জনতা। এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশ, আনসারসহ ১৫ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত ভরিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, পরাজিত প্রার্থীরা বিশৃঙ্খলা শুরু করলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপের সংখ্যা বলতে পারেননি।

স্থানীয়রা জানান, দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে দেউলী ইউনিয়নের আট কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা করা হলেও সন্ধ্যার পরও ভরিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল না। সন্ধ্যা ৭টার দিকে  আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন টুটুল ও বিএনপির প্রার্থী মোতাহার হোসেনের কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক অতর্কিতভাবে ভোট কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। একপর্যায় বিক্ষুব্ধ জনতা প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এক পর্যায় তাদের গুলি শেষ হয়ে গেলে তারা ভোট কেন্দ্রের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কয়েক হাজার মানুষ
বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দিতে গেলে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে বিক্ষুব্ধ জনগণ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

ভরিয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মামুনুর রশিদ রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বলেন, ‘আমাদের জীবন বিপন্ন। পুলিশের গুলি ফুরিয়ে গেছে অনেক আগেই। কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনগণ। দরজা জানালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’

কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের এসআই আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা অসহায় হয়ে সরকারি সম্পদ এবং নিজের জান নিয়ে সিঁড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় অন্ধকারে বাইরে কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।’

শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, পরে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যালট পেপার ও অন্যান্য সরঞ্জাম উপজেলা সদরে আনা হয়েছে।