সালিশে গৃহবধূকে লাঠিপেটা, কারাগারে ইউপি সদস্য

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় সালিশ বৈঠকে গৃহবধূকে (৬০) লাঠিপেটার অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, নির্যাতনের শিকার ওই নারী সারিয়াকান্দি থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর সকালে উপজেলার নারচি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তরিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সারিয়াকান্দি পৌরসভার উত্তর হিন্দুকান্দি এলাকার এক কবিরাজ ওই নারীর বাড়িতে যাতায়াত করেন। তিনি মাঝে মাঝে সেখানে রাত্রিযাপন করতেন। এলাকাবাসীর সন্দেহ, ওই বাড়ির একটি মেয়ের সঙ্গে কবিরাজের অনৈতিক সম্পর্ক আছে। আর এতে সহায়তা করেন মেয়েটির মা। সন্দেহের কারণে স্থানীয়রা শনিবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১০টার দিকে নারচি ইউনিয়নের গণকপাড়ার কৌডালার মালোপাড়ায় সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে। ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম ওই নারী ও কবিরাজকে দোষী সাব্যস্ত করেন। সালিশে কবিরাজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, মারধর ও কান ধরে ওঠবস করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ইউপি সদস্য প্রকাশ্যে ওই নারীকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে নারচি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ আলী বান্টু বলেন, ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম সালিশে ওই কবিরাজকে জরিমানা, মারধর ও কানধরে ওঠবস করান। এছাড়া ওই নারীকে লাঠিপেটা করা হয়। চেয়ারম্যানের দাবি, ইউপি সদস্য স্বজনদের চাপে এই কাজ করেছেন। এখানে তার কোনও দোষ নেই।

সারিয়াকান্দি থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, এক নারীকে লাঠিপেটা করার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসে। পরে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম, নির্যাতনের শিকার নারী ও তার মেয়েকে থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় ওই নারী তরিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকালে আদালতের মাধ্যমে তরিকুল ইসলামকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।