ইউএনওর গাড়িচাপায় সাংবাদিক নিহত, ৩ দিনেও হয়নি মামলা 

সিংড়ায় ইউএনওর গাড়িচাপায় সাংবাদিক সোহেল রানার নিহতের ঘটনার তিন দিন পার হলেও কোনও মামলা হয়নি। ওই ঘটনায় কাইকে গ্রেফতারও করা হয়নি। ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি কোনও প্রতিবেদনও জমা দেয়নি।

ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি।

মামলা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের স্ত্রী জনি খাতুন ও ভাই আনোয়ার জানান, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস তাদেরকে সহযোগিতা ও কাজের আশ্বাস দিয়েছেন। এ কারণে গাড়িচাপার ঘটনায় তারা কোনও মামলা করেননি।

এদিকে ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুন বলেন, আমাদের তদন্ত চলছে। কাজ শেষে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। 

তবে ওই গাড়িটি সিংড়ায় তেল কিনতে গিয়েছিল, নলডাঙ্গা ইউএনওর এমন দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ। কেননা, ওই ফুটেজে দেখা যায় ফিলিং স্টেশন অতিক্রম করেই ওই সাংবাদিককে চাপা দিয়েছে ইউএনওর গাড়ি। 

অপরদিকে ইউএনও অস্বীকার করলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার পরপরই গাড়ি থেকে এক নারীসহ দুই জনকে বের হতে দেখেছেন তারা।  সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর এ বিষয়ে ইউএনওর দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে উঠেছে।  

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, তেল নিতে গেলে গাড়িটির পাম্পে যাওয়ার কথা। তবে সেখানে না গিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়িটি সিংড়ার দিকে যাচ্ছিল কেন? ফিলিং স্টেশনের শেষ গেট অতিক্রম করে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আবার নাটোরে বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশন থাকতে নাটোর হয়ে সিংড়ায় কেন তেল আনতে যাবে চালক? 
আবার ওই গাড়িতে ইউএনওর স্ত্রী না থাকলে বের হওয়া নারী ও পুরুষ কে ছিল?
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়ার ইউএনও এবং তদন্ত কমিটির সদস্য সামিরুল ইসলাম বলেন, সব কিছু মাথায় রেখেই তদন্ত করছেন তারা। 

পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, নিহতের স্ত্রীকে একটি কাজের ব্যাবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া তিনি নিহতের দুই সন্তানেরও পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছেন। এর বাইরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে পরিবারটিকে সহায়তা দেওয়া যায় সে বিষয়েও কথা বলবেন বলে জানান তিনি।