নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলায় বোম্বে লিচুর এ বছর স্মরণকালের সেরা ফলন হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাগানমালিকরা। অধিক ফলনের পাশাপাশি অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দামও অনেক বেশি হওয়ায় খুশি তারা। এই উপজেলার বিভিন্ন বাগানে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বাগানমালিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পাকা লিচু আহরণ, গোছা বাঁধা আর বিক্রিতে। আর লিচু কিনতে প্রতিদিন বাগানগুলোতে ভিড় করছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার লিচু ব্যবসায়ীরা।
বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, এ বছর উপজেলার প্রায় ১শ’ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক হাজার ২শ’ টন। তবে ওই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলন হয়েছে। এ ছাড়া দামও বেশি পাচ্ছেন বাগানের মালিকরা। এ বছর এই উপজেলায় আনুমানিক ১২ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে।
উপজেলার খন্দকার মালঞ্চি এলাকার মল্লিকপুরের বাগানমালিক ও ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন জানান, তার ৮০টি গাছে লিচু ধরেছে। এ ছাড়াও তিনি এক লাখ টাকায় আরও দুটি বাগান কিনেছেন। কেনা ওই দুই বাগানে আরও ১৫টি লিচুগাছ রয়েছে। এবার অনুকূল আবহাওয়া আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় খুবই ভালো ফলন হয়েছে।
লিচুর এমন ফলন তিনি কখনও দেখেননি দাবি করে জানান, গত বছর লিচুর দাম প্রতি হাজার ১২০০-১৬০০ থাকলেও বর্তমান দাম ২২০০ টাকা হাজার। এক লাখ টাকায় কেনা ওই দুই বাগানের লিচুই তিনি দুই লাখ টাকার বেশি বিক্রি করে এক লাখের ওপরে লাভ করতে পারবেন এমন আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
একই গ্রামের বাগানমালিক আনোয়ার হোসেন জানান, তার ৪০টি লিচু গাছ রয়েছে। আর তার চাচি রাজেনা বেগমের রয়েছে ৪৯টি গাছ। জীবনে তিনি এবারের মতো লিচুর ফলন দেখেননি দাবি করে জানান, প্রতিদিনই ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও বরগুনা থেকে ব্যাপারীরা এসে বাগান থেকে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার জানান, ২৫টি গাছের একটি বাগান এক লাখ ৯০ হাজার এবং ১৩টি গাছের অপর একটি বাগান ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি।
এমন ফলন ও লাভ অব্যাহত থাকলে উপজেলায় লিচুবাগানের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
ছবি: প্রতিনিধি